বাংলাদেশের ঢাকা উত্তর সিটির পুরসভা এবং কলকাতা পুরসভা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মত বিনিময় করল। গতকাল ৫আগস্ট ঢাকার উত্তর সিটি পুরসভাকে ডেঙ্গু মোকাবিলার পদ্ধতি নিয়ে পরামর্শ দিল কলকাতা পুরসভা। উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নিয়ে আলোচনা করলেন।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় দিশা দেখাতে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে ঢাকাতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বাংলাদেশের উক্ত পুরসভা। কিন্তু প্রটোকল সংক্রান্ত কিছু সমস্যা থাকায় তা আর হয়ে ওঠেনি। সেই কারনে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশনের উদ্যোগে এই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুই পুরসভার কর্তারা এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত মত বিনিময় করেন। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞদের তরফে বাংলাদেশকে বার্তা দেওয়া হল, ডেঙ্গু ঠেকাতে মশা নিধন করুন তার উৎসস্থলেই। ডেঙ্গুবাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার বাড়বাড়ন্তে মশা মারার ধোঁয়া ছড়িয়ে তেমন কোনো কাজের কাজ হয়না। বরং যে অনুকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি পেয়ে এডিস মশা জন্মায়, তাকেই নষ্ট করতে হবে। ভিডিও কনফারেন্সের উল্টোদিকে থাকা ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বুঝিয়ে দিয়েছেন, যেহেতু ডেঙ্গু সহ মশাবাহিত নানা রোগের মোকাবিলায় কলকাতা অনেকখানি এগিয়ে রয়েছে, তাই এক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের পরামর্শ নিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। তিনি কনফারেন্সে জানান, কলকাতার পরামর্শে, কলকাতার অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা অনেককিছু জেনেছেন, সেই মতোই বাংলাদেশ অতি শীঘ্রই বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এই পদক্ষেপের অন্যতম হল, বাংলাদেশের ঢাকা উত্তরসিটির স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধিদল শীঘ্রই কলকাতায় আসবে। কলকাতা পুরসভা যেভাবে সারা বছর ধরে ডেঙ্গু মোকাবিলার ব্যবস্থা নিয়ে সাফল্য পাচ্ছে, সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেবেন ওই প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশে যে এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রান্ত গবেষণা চালাতে তেমন কোনও পরিকাঠামো, গবেষণাগার গড়ে ওঠেনি, তা সেদিন সেখানকার মেয়রের কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। এদিনের ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাই কমিশনার তৌফিক হাসান। তিনি জানান, বাংলাদেশের সব জেলাতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসেবে মতে এখনো পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। তবে বেসরকারি মতে সংখ্যাটা আরও বেশি বলে জানিয়েছেন তৌফিক সাহেবই। এদিন বাংলাদেশের পুরসভার কর্তাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, অতীন বাবু, কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ ডঃ দেবাশিস বিশ্বাস, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডঃ টি কে মুখোপাধ্যায়, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিরুল ইসলাম মোল্লা সহ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সঠিক পরিকাঠামো, ত্রিস্তরীয় পদ্ধতিতে ডেঙ্গু আক্রান্তের খোঁজ খবর নেওয়া, কোথাও ডেঙ্গু হলে র্র্য়াপিড অ্যাকশন টিমের মাধ্যমে সঙ্গে সঙ্গে এলাকা পরিষ্কার করিয়ে মশার বংশবিস্তারের সম্ভাবনাগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার মতো কাজ করার জন্য অতীনবাবুরা, আতিকুল সাহেবদের পরামর্শ দেন।