কারাদণ্ডে দণ্ডিত দোষীকে গৌড়ীয় মঠে সমাজকল্যাণে যুক্ত হয়ে শিক্ষা নিতে নির্দেশ দিল কোর্ট

আজকালকার সমাজে ছোট থেকেই শিশুরা যেরকম পরিবেশে বড় হচ্ছে, তার প্রভাব পড়ছে তাদের দৈনন্দিন জীবনে। দিন দিন কিশোরদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরাধ বেড়েই চলেছে। এই রকমই একটি অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক দোষী কিশোরকে গৌড়ীয় মঠে গিয়ে বিভিন্ন রকম সমাজকল্যাণমূলক কাজে যুক্ত হয়ে নৈতিক শিক্ষা নিতে নির্দেশ দিলেন। চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত কিশোরকে কলকাতা হাইকোর্ট এক বছরের নৈতিক শিক্ষার আদেশ দিয়েছে।

     দুই কিশোরের ঝগড়ার ফলে এক জন অপরজনকে মাথায় ও গলায় আঘাত করে। ইচ্ছাকৃতভাবে খুনের চেষ্টার ভিত্তিতে মামলা হয় ২০০৬ সালের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু দোষী ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাকে ক্ষমাশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা উচিত বলেন বিচারপতি। ক্ষমাশীল দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় উদ্ধৃত করে বলেছেন, আইন আসলে সামাজিক স্বার্থ নিয়ন্ত্রক। আইনকে সংস্কারমূলক ব্যবস্থার সাহায্য নিতে হবে। কিন্তু প্রতিটি মামলাঅপরাধের প্রকৃতিউদ্দেশ্য, অপরাধীর আচরণ, প্রাসঙ্গিক ঘটনাক্রম আলাদা। যার তুল্যমূল্য বিচার করতে হবে। অন্যায্য সহানুভূতি বিচারব্যবস্থার অনেক ক্ষতি করতে পারে। সেক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমবে। তাই সমাজকে রক্ষা করার, আইনি ব্যবস্থার প্রতি অপরাধীর ভয় সৃষ্টি করার দায়িত্ব বিচারব্যবস্থাকেই  নিতে হবে।

    আসলে, এই ধরণের বিচার করার ফলে আজকাল অনেকেই সমাজের মূল স্রোতে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন। শুধুমাত্র শাস্তি দিয়ে সব সময় দোষীর সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হয়না। তুলনায় যদি সমাজকল্যাণমূলক কাজে অথবা ক্রিয়েটিভ কোনো কাজে দোষীদের ব্যস্ত রাখা যায়, তাহলে তারা সদর্থক জীবনের মানে খুঁজে পায়। ফলে দোষ করার প্রবণতা অনেকটাই কমে যেতে সাহায্য করে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...