চলে গেলেন প্রবীণ অভিনেতা শ্রীরাম লাগু। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে পুত্র বিদেশ থেকে ফিরলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
১৯২৭ সালের ১৬ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের সাতারার্তে জন্ম হয় শ্রীরামের। প্রায় একশোরও বেশি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছে্ন। হিন্দি ছবির পাশাপাশি মারাঠি এবং গুজরাতি ছবিতেও কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। মঙ্গলবার সাড়ে নটা নাগাদ তাঁর জীবনাবসান হয়। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন।
কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ইএনটি সার্জেন হিসেবে। কিন্তু প্যাশন ছিল অভিনয়। স্বাধীনতা উত্তর পরিস্থিতিতে বিজয় তেন্ডুলকরের নেতৃত্বে মারাঠি থিয়েটারে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। একটা সময় ডাক্তারি ছেড়ে পুরোপুরি অভিনয়ে মন দেন।
মারাঠি থিয়েটারে তিনি ছিলেন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব। মারাঠি, হিন্দি, গুজরাতি তিন ভাষাতেই দক্ষ ছিলেন। মঞ্চেও তাঁকে তিনটি ভাষার নাটকেই অভিনয় করতে দেখা যেত।
১৯৮০ সালে, মারাঠি ছবি ‘সিংহাসন’ দিয়ে তাঁর পর্দার অভিনয় জীবন শুরু।
'একদিন অচানক', 'ঘরোন্দা', 'মুকাদ্দার কী সিকান্দার'- এর মতো অজস্র হিট সিনেমায় তাঁকে দেখা গিয়েছিল।
রিচার্ড অটেনবার্গ পরিচালিত ‘গান্ধী’ ছবিতে ‘গোপালকৃষ্ণ গোখলে’র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ১৯৭৮ সালে সেরা সহ-অভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে সম্মানিত হন তিনি। ‘ঘরোন্দা’ ছবির জন্য।
কী মঞ্চ কী রূপালী পর্দা সব মাধ্যমেই তাঁর প্রধান লক্ষ্য থাকত চরিত্র যেমনই হোক তাঁর অভিনয় যেন ‘রিয়েলিস্টিক’ হয়।
‘ন্যাচারাল অ্যাক্টিং’-এর প্রসঙ্গ যখন আসত তখন তাঁর সহঅভিনেতারা তাঁকে মতিলাল, বলরাজ সাহানীর সঙ্গে তুলনা করতেন।
প্রায় দু’দশক ধরে বলিউডের নিয়মিত মুখ। আশির দশকে বলিউডের ব্যস্ততম অভিনেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। ভালবাসতেন নিজেকে ব্যস্ত রাখতে। পুত্রকে হারিয়ে ছিলেন দুর্ঘটনায়। সেই শোক ভুলতে নিজেকে আরও বেশি ব্যস্ততায় ডুবিয়ে রাখতেন। বেশ কিছু জনপ্রিয় টিভি শো তে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
বলিউড মশালা মুভি থেকে শুরু করে নিউ এজ ফিল্ম, সব ধরনের ছবিতে দেখা গিয়েছিল শ্রীরামকে। থিয়েটার তাঁর কাছে অক্সিজেনের মতো জরুরী ছিল। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার অন্যথা হয়নি।
তাঁর মৃত্যুতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ অনেকেই।