বানরের খ্যাদ্যাভাসে আমূল পরিবর্তন। বনের বানর ফল পাতা ছেড়ে মজেছে বিরিয়ানিতে। এমন দৃশ্যই এখন দেখা গেছে সুন্দরবন এলাকায়। কি কারণ থাকতে পারে এর পিছনে? পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা এই তিন নদীর অববাহিকায় অবস্থিত বদ্বীপযুক্ত সুন্দরবন বরাবরই পর্যটকদের আকর্ষণ করে থাকে। সমুদ্র তীরবর্তী এই এলাকা বরাবরই ম্যানগ্রোভ অরণ্যের বাড়বাড়ন্তের জন্য পর্যটকদের খুব কাছের। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই অঞ্চলে বছরের বিশেষ কিছু সময় পর্যটকদের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। আর এই পর্যটনই মূলত দায়ী বানরের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের জন্য।
জানা গেছে, সুন্দরবন এলাকার বানরদের মধ্যে দেখা গেছে এক অদ্ভুত পরিবর্তন। তাদের মধ্যে ফল পাতা এইসব খাওয়ার অভ্যেস অনেকটাই কমতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে প্যাকেটজাত খাবার অর্থাৎ বিরিয়ানি খাওয়ার প্রবণতা অধিক হয়েছে। ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলযুক্ত এই সুন্দরবনে পর্যটন শিল্পের উন্নতির সাথে সাথেই পরিবর্তিত হয়েছে বানরদের খাবার অভ্যেস। সুন্দরবনের সজনেখালী এবং ঝাড়খালি পর্যটন কেন্দ্রের আশেপাশেই দেখা গেছে এই ঘটনা। এই এলাকায় চিপসের প্যাকেট, বিস্কুটের প্যাকেট এবং বিরিয়ানির প্যাকেট পড়ে থাকলেই সেখানে হানা দিচ্ছে বানরকুল। এমনকি ঠান্ডা পানীয়ের বোতলের প্রতিও তাদের অগাধ আগ্রহ দেখা গেছে। এমনকি এইসব খাবারের লোভে বানরকুলকে হানা দিতে দেখা গেছে বিভিন্ন লঞ্চে।
জানা গেছে, এই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আজকের ঘটনা নয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন,দিনের পর দিন মুখের সামনে খাবার পাওয়ার ফলেই তাদের খাদ্যাভ্যাসে হয়েছে এই পরিবর্তন। বানরকে খেতে দেওয়ার অভ্যেসও মানুষের বহুদিনের। আর এইসব অভ্যেস এবার বিপদেই ফেলেছে তাদের। বানরকুল সুযোগ পেলেই এখন হাত থেকে কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে খাবার। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, সুন্দরবন এলাকায় কোনোদিনও পশুদের খাবারের অভাব ছিল না। তাহলে কেন এই পরিবর্তন? প্রাণীবিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সহজলভ্য খাবারের দিকেই হাত বাড়াতে দেখা গেছে তাদের। আর এইভাবেই হাতের কাছে খাবার পেয়ে যাওয়ার ফলেই বদলাচ্ছে তাদের অভ্যেস।