বারাণসীর শ্রী সাম্রাজ্যেশ্বর পশুপতিনাথ মন্দির

শ্রী সাম্রাজ্যেশ্বর পশুপতিনাথ মন্দির বারাণসীতে পরিচিত নেপালী মন্দির নামে। ভারত-নেপাল মৈত্রীর নিদর্শন।

লাল রঙের প্যাগোডার আকারে এই মন্দির বারাণসী শহরের অন্যতম আকর্ষণ। সাধারণের কাছে এই মন্দির পরিচিত ‘নেপালী মন্দির’ নামে। অনেকের কাছে আবার ‘মিনি খাজুরাহো’

১৮০০ শতাব্দীতে নেপালের মহারাজ রণবাহাদুর শাহ সিংহাসনে আরোহনের পর কাঠমান্ডুর পশুপতি মন্দিরের আদলে গড়ে তুলেছিলেন। প্রতিদিন ভোলা মহেশ্বরের আরতি ও পুজোর সময় বহু ভক্তের সমাগম হয়।

কাশী বিশ্বনাথ মন্দির দশর্ন করে ভক্তরা ললিতঘাটে যান এই মন্দির দর্শন করতে। বিশেষ করে নেপাল থেকে বারাণসী ভ্রমণ করতে আসা ভক্তরা।

১৮০০ থেকে ১৮০৪ পর্যন্ত চলেছিল মন্দিরের নির্মাণ কাজ। নেপালের মহারাজ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে করিয়েছিলেন। প্রাথমিক কাজ সমাপ্ত হতে তিনি ফিরে যান নিজভূমে। বৈমাত্রেয় ভ্রাতা শের বাহাদুর শাহের হাতে মৃত্যু হয় মহারাজ রণবাহাদুরের।

বারাণসীর পশুপতি মন্দির নির্মাণের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করেন তাঁর পুত্র গিরবান যোদ্ধা বিক্রম শাহ। দীর্ঘ চারদশক সময় লেগেছিল। নির্ধারিত সময়সীমার ২০ বছর পেরিয়ে খুলে ছিল মন্দিরের দরজা।

১৮৪৩ সালে কাশী অধিপতি মন্দিরের জমি এবং সংলগ্ন এলাকা নেপা অধিপতির নামে হস্তান্তর করে দেন। ভারত –নেপাল দুই দেশের মৈত্রী সম্পর্কের নিদর্শন স্বরূপ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

নেপালী প্যাগোডার আদলে তৈরি মন্দিরটি আদত পশুপতিনাথ মন্দিরের রেপ্লিকা বলা যায়। কাঠ, পাথর, টেরাকোটায় তৈরি। মন্দিরের গায়ে খাজুরাহের আদলে ভাস্কর্য খোদিত করা হয়। কাশী, নেপাল এবং খাজুরাহ মিলেমিশে লীন হয়ে গিয়েছে বারাণসীর এই মন্দিরটিতে।

এই মন্দিরে একটি ধর্মশালাও আছে। নেপাল সরকার সেটির দায়িত্বে।

তবে সময়ের ছাপ পড়েছে এই মন্দিরের গায়েও। মন্দিরের কাঠের কারুকাজ আজ অনেকটাই বিপর্যস্ত। কিন্তু তাতে গুরুত্ব কমে না। স্থানীয় ভাষায় এই মন্দিরটিকে বলা হয় ‘নেপালী খাপরা’। দশাশ্বমেধ ঘাট থেকে মণিকর্ণিকা ঘাট যাওয়ার পথে পড়ে এই মন্দির।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...