“দ্য স্যাডনেস ইস লাস্ট ফরএভার”
মৃত্যুর আগে এটাই ছিল তাঁর শেষ কথা। ভাই থিও জানিয়েছিলেন। তাঁর দাদা ভ্যান গঘ শেষ নিঃশ্বাস নিতে নিতে ঠিক এই শব্দগুলোই উচ্চারণ করেছিলেন। রিভলভারের ট্রিগার থেকে নিজের দিকে নিজেই ছুটিয়ে ছিলেন বুলেট। ব্যর্থ অথচ অব্যর্থ শিল্পী। সারা জীবন ধরে যিনি কেবল বেদনা কুড়িয়ে গিয়েছেন।
১৮৯০-এর ২৯ জুলাই নিজের ঘর থেকে বেশ কিছুটা দূরে এক ফাঁকা মাঠে গর্জন করে উঠেছিল রিভলভার। চার পাশের নিস্তব্ধতাকে খানখান ভেঙে শূন্য মাঠে লুটিয়ে পড়েছিলেন
ভিনসেন্ট। রক্তে ভেসে গিয়েছিল মরা ঘাস। হলুদ মাঠের মাটি। ঠিক দুদিন পর তিনি মারা যান। বুলেটের ক্ষতের থেকে অনেক গভীর কোনও ক্ষত ভিতরে পুষে
রাখতে রাখতে একদিন শুধু ফুরিয়ে যাওয়ার বোধ গ্রাস করে। ঝরে যাওয়া গম ক্ষেতে শূন্যতাই একমাত্র রং। বড় বিষাদকাতর হলুদ। নিমগ্ন বিষণ্ণতায় শুধু ক্লান্তির গান গেয়ে চলে হামিংবার্ড।
গোপনে পুষে রাখা জখমের বীজগুলো জল পায়। ঘনিয়ে ওঠে মৃত্যু । শিল্পীর তুলির রং ফুরিয়ে যায়। হাতে উঠে আসে রিভলবার। ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ তখন আত্মহত্যা করেন।
সম্প্রতি নিলাম হল সেই রিভলবার। ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত হয় নিলাম। প্যারিসের নিলাম সংস্থা ‘রেমিলে ফার’ আয়োজন করে। প্রত্যাশার চেয়ে প্রায় তিনগুন বেশি দামে বিক্রি হয়েছে ভ্যান গঘের আত্মহত্যার যন্ত্রটি। ৭.৭ মিলিমিটারের মরচে ধরা, পকেট রিভলভার।
এক ব্যক্তি ৮২ হাজার মার্কিন ডলারে কিনে নিয়েছেন ভ্যান গঘের রিভলভার। ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার জন্য। তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ২০১৬ সালে আমস্টারডামের ভ্যান গঘ মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হয়েছিল রিভলভারটি।
ভ্যান গঘের মৃত্যুর প্রায় সাত দশক পর তাঁর বাড়ির পিছন থেকে এই রিভলভারটি খুঁজে পাওয়া যায়। গবেষকরা বলছেন, প্রায় ৫০ থেকে ৮০ বছর ধরে মাটিতে পড়েছিল এটি। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে এই রিভলভারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। অকশন আর্ট জানিয়েছে, ভ্যান গঘ যে জায়গায় আত্মহত্যা করেছিলো সেখানে মাটির নিচে রিভলভার পাওয়া গিয়েছিল। শিল্পীর শরীরে যে ধরণের বুলেট পাওয়া গিয়েছিল একই আকারের বুলেট এই রিভলভারেও মিলেছে।
এই নিলামের সমালোচনা করেছে ভ্যান গঘ ইনস্টিটিউটও।