সর্দি-কাশি হোক বা রক্তাল্পতার সমস্যা সারিয়ে তুলতে পারে একটি ঘরোয়া টোটাকা। যার নাম কুলেখাড়া। ছোটবেলায় প্রায় সকলের বাড়িতেই মা-ঠাকুমার হাতে তৈরি কুলেখাড়ার জল খেয়েছে। আসলে কুলেখাড়াকে বলাই যায় সর্বরোগহর মহৌষধী। অন্য নামে গোকুলকাঁটা।
এই উদ্ভিদে রয়েছে অজস্র ভেষজগুণ। আয়ুর্বেদে কুলেখাড়ার বীজ, শিকড় এবং পঞ্চাঙ্গ মানে মূল, ফুল, কাণ্ড, ফল এবং পাতা এক সঙ্গে পুড়িয়ে ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, আয়রন উৎসেচক, স্টেরন থাকে কুলেখাড়াতে। পেটের সমস্যা যেমন গ্যাস, আমাশয়, অ্যাসিডের মতো সমস্যা অনেকটা কমে যাবে কুলেখাড়া খেলে। হাঁটু ব্যথা, কোমর ব্যথা, শরীরে বাতের ব্যথা থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। প্রতিদিন নিয়ম করে কুলেখাড়া পাতার রস গরম দিয়ে খেতে পারলে রক্তল্পতার সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা আরও কমে যাবে। দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে, অনিদ্রাজনিত সমস্যা, লিভারের সমস্যায় কুলেখাড়া খুব কার্যকরী। শরীরের কোথাও কেটে গিয়ে ক্ষত তৈরি হলে সেখানে কাঁচা হলুদ ও কুলেখাড়ার রস বেটে লাগলে ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।
অনেকে আছেন যাদের একবার শরীরের কোনও অংশে আঘাত লাগার ফলে ক্ষত সৃষ্টি হলে সেই ক্ষত থেকে একবার রক্ত বেরোতে শুরু করলে তা সহজে বন্ধ হয় না। এমন সমস্যা থাকলে ক্ষত অংশে কুলেখাড়া পাতার রস দিতে হবে আর সেটা একটা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিতে হবে।
হারপিস হলেও এই গাছের পাতা বেটে লাগালে তার ফল পাওয়া যায়। ফিসচুলার মতো অসুখ হলে কুলেখাড়া খুব ভালো কাজ দেয়। কুলেখাড়া পাতার রস সেদ্ধ করে খেতে পারলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। প্রায় সব রকমের ভেষজগুণ সম্পন্ন কুলেখাড়া দেখতে পাওয়া যায় মায়ানমার, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয় দেশগুলিতে।