আলু দিয়েই বশে রাখুন আলুথালু চুলকে

বাঙালির রান্নাঘরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো আলু। আলু ছাড়া যেন বাঙালির রান্না অসম্পূর্ণ। আলুপোস্ত হোক বা রবিবারের মাংসের ঝোল আলু না থাকলে মনে হয় রান্নাতে যেন ঠিকঠাক স্বাদই হয়নি। বাংলাইর এই আলুপ্রীতি এতটাই বেশি যে এই কথাটি মাথাতেও থাকে না যে আলুতে থাকে প্রচুর পরিমানে শর্করা যা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। তবে আলু যে শুধু খাবারেই আলাদা স্বাদ আনে তা কিন্তু নয়। আলু রূপচর্চার কাজেও লাগে। চুলের যত্নেও কিন্তু আলুর উপকারিতা প্রচুর। চলুন আজ আলুকে কিভাবে চুলের উপকারে লাগানো যায় সেই নিয়ে আলোচনা করি।

আলুর রস রূপচর্চার ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। কিন্তু চুলের ক্ষেত্রে কিভাবে ব্যবহার করবেন এই আলুর রস চলুন জেনে নেওয়া যাক.........

আলুতে থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, জিঙ্ক, নিয়াসিন এবং আয়রন যা চুলের গ্রোথ বাড়ানোর সাথে সাথে চুলের নারিশমেন্টের উপর খেয়াল রাখে। আলু চুলের গোড়া পরিষ্কার করার সাথে সাথে চুলের ফলিকলের মধ্যে থাকা ধুলোময়লা বের করে চুলকে পরিষ্কার করে। আলুতে থাকা উপাদান খুশকি কমানোর সাথে সাথে চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণ করে। আলুর উপাদান চুলের ওপেন কিউটিকল বন্ধ করে চুলের ভেঙে যাওয়া যেমন রোধ করে সেরকম চুলে একধরণের শাইন আনে। আলুর রসের সাথে মধু এবং ডিম মিশিয়ে নিলে এটি কন্ডিশনারের কাজ করে।  

এবার চলুন জানা যাক চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে কিভাবে আলুর রস ব্যবহার করবেন-

প্রথমেই আলু ছোট ছোট টুকরো করে কেটে তার খোসা ছাড়িয়ে নিন। এবার সেই আলু একসাথে শিলনোড়া বা মিক্সির সাহায্যে বেটে নিতে হবে। আলুর মিশ্রণ কোনো মখমলের কাপড়ে নিয়ে চিপে রস বার করে নিতে হবে। যদি মনে হয় রসটি বেশি ঘন তাহলে এর মধ্যে সামান্য জল মিশিয়ে নেওয়া যাবে। এবার এই রস চুলের পরিচর্চার কাজে লাগানো যেতেই পারে।

 

১) মিডিয়াম দৈর্ঘ্যের চুলের জন্য হাফ কাপ আলুর রস নিয়ে স্ক্যাল্পে মালিশ করতে থাকুন। সারা মাথায় এইভাবেই রসটি লাগিয়ে নিন। এইভাবে ১৫ মিনিট রেখে দিয়ে তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই পদ্ধতিটি ফলো করুন। আলুর রসের পাশাপাশি মাথায় ম্যাসেজ করার ফলে ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পায় আর এর ফলেই ত্বকের নিচে থাকা ধুলো ময়লা বাইরে বেরিয়ে আসে।

২) তিনটি মাঝারি মাপের আলুর রস, একটি ডিমের কুসুম এবং এক টেবিলচামচ মধু একসাথে মিশিয়ে প্যাক হিসেবে মাথায় লাগাতে পারেন। এইভাবে ৩০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। প্রতিসপ্তাহে একবার করে এই প্যাক ব্যবহার করুন। আপনার চুল যদি প্রচন্ড রুক্ষ হয়ে থাকে তাহলে এই প্যাকটি আপনার চুলের জন্য আদর্শ হবে। কারণ এই প্যাকে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদানই প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের কাজ করে।

৩) একটি মাঝারি মাপের আলু এবং একটি মাঝারি মাপের পেঁয়াজ নিয়ে তাদের খোসা ছাড়িয়ে নিন। এবার আলু এবং পেঁয়াজের ছোট ছোট টুকরো করে নিন। এরপর আলু ও পেঁয়াজ একসাথে বেটে একটি স্মুথ পেস্ট বানিয়ে নিন। একটি পাতলা কাপড় দিয়ে রসটা ছেঁকে বের করে নিন। এই মিশ্রণটি একটা পরিষ্কার বোতলে রেখে দিন। শ্যাম্পু করার ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে এটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন। এর পর মাথায় এই মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে নিন। আলুর রস এবং পেঁয়াজের রস দুটিই চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই এই দুটির সংমিশ্রণ যে আরও উপকারী হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

৪) আলুর রসের সাথে অ্যালোভেরার রস মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে সেটাও চুলে লাগানো যায়। এক্ষেত্রে একদিকে রয়েছে আলুর উপকারিতা অন্যদিকে রয়েছে অ্যালোভেরার উপকারিতা। এর জন্য একটি মাঝারি মাপের আলুর রস এবং তার সাথে লাগবে ২ টেবিলচামচ অ্যালোভেরা জেল। আলুর রসের সাথে অ্যালোভেরা জেল মিশতে একটু বেশি সময় লাগে তাই ধৈর্য্য ধরে মেশান যতক্ষণ না মিশ্রণটি স্মুথ হচ্ছে। এই মিশ্রণটি স্ক্যাল্পে মালিশ করে তারপর একটি শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। ৩০ মিনিট এইভাবে রেখে শ্যাম্পু করে নিন।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...