রেস্ত থাকলে পোস্ত খান

শরীরের নানা উপকার সাধনের পাশাপাশি ঘুম আনতে সাহায্য করে একধরণের বীজ। আফিম গাছের দানা যা বাজারে পোস্ত হিসেবে পাওয়া যায় সেই পোস্ত শরীরের কি কি উপকার করে আর কি ভাবে পোস্তর ব্যবহার করলে শরীর স্বাস্থ্য ভাল থাকবে জানা আছে কি?  চলুন আজ এই পোস্তদানা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

পোস্ত দানা হলো ওপিয়াম পপি নামক একটি গাছ থেকে পাওয়া একধরণের তৈলবীজ। তৈলবীজ হলো সেই সমস্ত বীজ যার থেকে তেল নিষ্কাশন করা যায়। অর্থাৎ পোস্ত থেকে যে তেল নিষ্কাশন করা যায় তা তো জানা হয়েই গেলো। বহু প্রাচীনকাল থেকেই পোস্তকে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে চিকিৎসার এক অমূল্য দ্রব্য বলে মনে করা হয়। চলুন এই পোস্তদানা শরীরের ক্ষেত্রে কিভাবে উপকারী ভূমিকা গ্রহণ করে তা জানা যাক...

১) এক টেবিলচামচ পোস্ততে ১২ গ্রাম ফাইবার থাকে। পোস্ততে উপস্থিত এইধরণের ডায়েটারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে থাকে। তাই নিয়মিত পোস্ত খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

২) এক টেবিল চামচ পোস্ত দানায় থাকা ৮% মিনারেল ম্যাঙ্গানিজ অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট প্রতিরক্ষায় উপকারী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে।

৩) শরীরে নতুন লোহিত কণিকা তৈরী জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রী হলো লোহা এবং তামা। রক্তে লোহিত কণিকার অভাব হলে রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। পোস্ততে থাকা উপাদান রক্তে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।

৪) পোস্ততে থাকা প্রচুর পরিমান আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়াতে সাহায্য করে এবং এর সাথে সাথেই শিরা ও উপশিরার মধ্যে দিয়ে রক্তের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মস্তিষ্কে সঠিক মাত্রায় রক্ত প্রবাহের ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছায় এবং জ্ঞানীয় কাজকর্ম খুব ভালো হয়। তাই রোজ পোস্ত খাওয়ার অভ্যেস থাকা ব্যক্তির অ্যালঝাইমার্স-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

৫) জিঙ্কের খুব ভালো একটি উৎস হলো এই পোস্তদানা। তাই পোস্ত খাওয়ার ফলে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। আর্থ্রাইটিসের সমস্যা থাকলে সেই ক্ষেত্রে পোস্ত খুব ভালো কাজ দেয়।

৬) এছাড়াও পোস্ত শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তাই গরমকালে অন্য কিছু না খেয়ে চেষ্টা করুন কাঁচা পোস্ত বাটা দিয়ে ভাত খাওয়ার।

৭) প্রতিগ্রাম পোস্তদানায় ৬.২৯ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। আর কাঁচা লংকার মধ্যে খুব অল্প পরিমান সোডিয়াম থাকে। প্রতি টেবিল চামচ কাঁচা লংকায় ২.৩ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। এই দুইয়ের কম্বিনেশন হাইপারটেনশন কমাতে সাহায্য করে।

৮) পোস্ততে প্রচুর পরিমানে ম্যাগনেসিয়াম থাকার ফলে পোস্তদানা ঘুমের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত হয়ে থাকে। তাই কখনো ঘুমের সমস্যা হলে পোস্তর ব্যবহার শারীরিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

খাদ্যরসিক বাঙালির কাছে গরম ভাত আর পোস্তবাটা এক স্বর্গীয় অনুভূতির সৃষ্টি করে। তাই স্বাদের সাথে সাথে যদি বিনামূল্যে শারীরিক উপকার পাওয়া যায় তাহলে তো কোনো কথাই নেই। কি তাই তো?

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...