কথায় বলে, আমে দুধে মিশে যায় আর আঁটি গড়াগড়ি খায়। বাংলায় প্রচলিত এই প্রবাদটি অনেকক্ষেত্রেই বলে থাকে বাঙালিরা। আর বলবে নাই বা কেন বলুন? আম খাওয়ার পর আঁটি ছুড়ে ফেলে দেওয়াটাই দস্তুর। কিন্তু এই আঁটির যে কত স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে তা কি জানা আছে? আমের থাকে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল এবং নানা উপকারী উপাদান। চলুন আজ আমের আঁটির উপকারিতা নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক...........
১) আমের আঁটির থেকে তৈরী পাউডার ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করে থাকে। আমাশা বা রক্ত আমাশার ক্ষেত্রে এই আমের আঁটির পাউডার উপকারী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। প্রতিদিন ১ থেকে ২ গ্রাম আমের আঁটির পাউডারের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়ার সমস্যা সহজেই দূর হয়ে যায়।
২) আমের আঁটির মধ্যে উপস্থিত নানা উপাদান শরীরে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। শরীরে বেড়ে চলা কোলেস্টেরল লেভেলকে কমাতেও এর প্রভূত ভূমিকা রয়েছে। এর সাথে সাথেই এটি রক্তে শর্করার পরিমান কমাতেও সাহায্য করে থাকে।
৩) যাদের হার্টের অসুখ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও আমের আঁটি খুব উপকারী। আমের আঁটি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। এছাড়াও স্নায়ুতন্রের উন্নতিসাধনেও আঁটির যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
৪) আমের আঁটির মধ্যে উপস্থিত নানা উপাদান শরীরে গ্লুকোজ শোষণ কমিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। আমের আঁটি যকৃৎ এবং ইন্টেসটাইনের মধ্যে হরমোনের পরিবর্তন ঘটিয়ে গ্লুকোজের শোষণের হার কমিয়ে দেয়।
এগুলো তো গেলো আমের আঁটির স্বাস্থ্যগুণের কথা। এর পরে আসা যাক আমের আঁটি ত্বকের জন্য কি কি উপকার করে সেই কথায়। আমের আঁটি খুশকি কমাতে সাহায্য করে। হঠাৎ শরীরে স্থূলত্ব এসে গেলেও সেই ক্ষেত্রে উপকার দেয় আমের আঁটিই। চলুন জেনে নিন, ত্বকের উপর আমের আঁটির উপকারিতার কথা.................
১) আমের আঁটি খুশকি দূর করতে সাহায্য করে থাকে। তবে এর জন্য আপনাকে বাজার থেকে কিনতে হবে ম্যাংগো সিড বাটার। এই বাটার চুলের লেংথ অনুযায়ী লাগিয়ে নিন। সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
২) আমের আঁটি থেকে দাঁত মাজার পাউডার তৈরী হয়। এই পাউডার বাজারে বেশ উপলব্ধ।সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করা আমাদের সকলেরই অভ্যেস। সেই সময় বাজারচলতি পেস্টের ব্যবহারের বদলে যদি আমের আঁটি থেকে তৈরী গুঁড়ো পেস্ট যদি ব্যবহার করা যায় তাহলে দাঁত খুব অল্প সময়ে চকচকে হয়ে যায়। দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই পেস্টটি।
যে জিনিসটি আমরা সাধারণত ফেলে দিয়ে থাকি তার এতো উপকারী ভূমিকা রয়েছে তা কি জানা ছিল? যদি জানা নাও থাকে তাহলে আজ জেনে গেলেন তো? কিন্তু উপরোক্ত পদ্ধতিগুলির ক্ষেত্রে বাড়িতে আমের আঁটি দিয়ে এইসব প্রসাধনী তৈরী করা সম্ভব নয়। সেই ক্ষেত্রে বাজার চলতি সামগ্রীই আমাদের ব্যবহার করতে হয়। বাজারে উপলব্ধ সামগ্রীর মধ্যে অল্প পরিমানে হলেও মিশ্রিত থাকে ক্ষতিকর রাসায়নিক। সেই ক্ষেত্রে এই রাসায়নিকযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করার আগে সতর্কীকরণ বার্তা ভালো করে দেখে নেওয়া উচিৎ।