গ্রীষ্মকাল হাজির আর গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপ জানান দিছে তেতো খাওয়ার সময় উপস্থিত| তেতো খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে| তাছাড়া এই প্রচন্ড গরমে যখন কোনো কিছুই মানুষের মুখে রোচে না সেইসময় ত্রাতা হিসেবে দেখা দিতে পারে করলা| তেতো স্বাদের জন্য সকলের কাছে ভিলেন হয়েই রয়ে গেছে যে করলা সেই করলার গুনাবলী শুনলে অবাক কিন্তু হতেই হয়|
করলায় থাকে পলিপেপটাইড পি নামক এক যৌগ যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে| করলাই একমাত্র ফল যা একইসাথে ফল ও সবজি এই দুয়েরই গুনাগুণ নিজের মধ্যে ধরে রেখেছে| করলায় ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমানে বর্তমান| করলায় উপস্থিত ভিটামিনগুলি হলো, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩ এবং বি-৯| এতে উপস্থিত মিনারেলগুলি হলো ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস প্রভৃতি| অ্যান্টি অক্সিডেন্ট-এর মধ্যে রয়েছে ফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েডস প্রভৃতি|
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে করলা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে| কিন্তু করলায় কী থাকে যা ডায়াবেটিসে কাজ দেয়? করলা ইনস্যুলিনের ন্যায় কাজ করে ফলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রিত হয়| করলা খাওয়ার অভ্যেস কোষের মধ্যে গ্লুকোজকে ইউটিলাইজ করতে সাহায্য করে| এর ফলে কোষের শক্তির বৃদ্ধি ঘটে| এইভাবে শরীরের নানা প্রান্তে যথা মাসল, মাংসপিন্ড প্রভৃতি জায়গায় শক্তিকে প্রেরণ করে| চিকিৎসাবিজ্ঞানে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা হিসেবে করলার পরিচিতি না থাকলেও বহুযুগ আগে থেকেই করলার ভেষজগুণ সকলের জানা| তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় করলার ভূমিকা না থাকলেও করলা যে রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় তা মেনে নেন সকল চিকিৎসকেরাই|
করলার সাথে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক কি তা জানার জন্য বহুযুগ আগে থেকেই নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে| সেরকমই একটি গবেষণায় দেখা গেছে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করছে করলা| সেই গবেষণাতেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, করলার এই বিশেষ গুণকে কিভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে আরও বিশদে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান তারা| এরপরে আরও একটি গবেষণা করেন বিজ্ঞানীরা| সেই দ্বিতীয় গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল ডায়াবেটিসে করলার ভূমিকা এবং ডায়াবেটিসে বাজারচলতি ড্রাগের ভূমিকা| এই গবেষণায় প্রমাণিত হয় করলা রক্তে গ্লুকোসামিনের পরিমান কমাতে সাহায্য করে|
তাই এবার থেকেই করলা খাওয়ার অভ্যেস করুন| বাড়ির ছোটদেরও খাওয়ান| দীর্ঘদিন করলার রস যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে ব্লাড সুগার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে|