‘পারিয়া’ ছবির সাফল্যের পর আবারও তথাগত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নতুন বাংলা ছবি ‘রাস’। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের গল্পের উপর নির্মিত হবে এই সিনেমা। প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছে ‘ছবির মতো এন্টারটেইনমেন্ট’ । একটি যৌথ পরিবারের হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা, সম্পর্ক এবং মূল্যবোধের গল্প বলবে এই ছবি।
‘রাস’ সিনেমায় প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন বিক্রম চট্ট্যোপাধ্যায় এবং দেবলীনা কুমার। তথাগত মুখোপাধ্যায়ের সিনেমা ‘পারিয়া’তে আগেও নায়ক চরিত্রে দেখা গেছে বিক্রম চট্ট্যোপাধ্যায়কে। এবারও পরিচালকের পছন্দের নায়ক তিনি। ছবিতে ফুটে উঠবে এক যৌথ পরিবারের ছবি। সেই কারণেই সিনেমাটিতে রয়েছে মোট ৩২টি মূল চরিত্র। এই কারণে প্রায় ৫০ জন অভিনেতা একসাথে কাজ করেছেন এই প্রজেক্টে। প্রতিটি দৃশ্যে প্রায় ২৪-২৫ জন অভিনয়শিল্পীর উপস্থিতি রয়েছে।
মুখ্য চরিত্রে বিক্রম চট্ট্যোপাধ্যায় ও দেবলীনা কুমার ছাড়াও রয়েছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী, অনসূয়া মজুমদার, শঙ্কর দেবনাথ, অর্ণা মুখোপাধ্যায়, রনজয়, পারিজাত চৌধুরী, দেবাশীষ, সুদীপ মুখার্জি, দেবপ্রসাদ হালদার, অপ্রতিম চ্যাটার্জি সহ একাধিক গুনী অভিনেতাগণ। যৌথ পরিবারের আনন্দ, উদযাপন এবং প্রতিদিনের চঞ্চলতা যা আজকের জীবনে প্রায় হারিয়ে গেছে, তা ছবির মূল অংশ।
পরিচালনা ছাড়াও ‘রাস’ সিনেমার গল্প লিখেছেন তথাগত মুখোপাধ্যায়। সম্পাদনার দায়িত্বে রয়েছেন আমির মণ্ডল ও শিল্প নির্দেশনায় রয়েছেন আনন্দ অধ্য। এছাড়াও ডিওপির ভূমিকায় উত্তরণ দে, সাউন্ড ডিজাইন ও মিক্সিং এর দায়িত্বে রয়েছেন অদীপ সিং মানকি ও তন্ময় সাহা।
সিনেমার গল্পে দেখা যাবে, মানিকপুরের চক্রবর্তী পরিবারে উৎসবের আমেজ। পরিবারের সবাই মেতে উঠেছে বড় রাস উৎসব এবং ঝুলনের প্রস্তুতিতে। কারণ বাড়ির ছেলে সোমনাথ (নায়ক) ১৮ বছর পর বাড়ি ফিরছে। সোমনাথ তার জীবনের প্রথম ১২ বছর চক্রবর্তী বাড়িতে কাটিয়েছে। মায়ের সঙ্গে গ্রামে তার জীবন ছিল রূপকথার মতো। কিন্তু ছোটবেলার সেই জীবনে মা ছাড়াও সোমনাথের সবথেকে প্রিয় দুই মানুষ ছিলেন ঠাকুমা অকালনন্দা দেবী ও পাড়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাই। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর সোমনাথ সবাইকে ছেড়ে সে চলে যায়। এরপর বছর পেরিয়ে গেছে, সোমনাথ এখন ৩০ বছর বয়সী। ১৮ বছর সে আবারও ফিরে আসে মানিকপুরে, তাঁর শিকড়ে। তবে থাকতে নয়, শেষ বারের মতো বিদায় জানাতে পরিবারে ফেরে সে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর নিজের গ্রামে সোমনাথের এই ফেরা কি তাঁকে নতুন জীবনের সন্ধান দেবে, এই নিয়েই আবর্তিত হয়েছে সিনেমার কাহিনি।
রাস দুই বিপরীত জগতের গল্প—মূল্যবোধ, হারানো ভালোবাসা এবং বাঙালি পরিচয়ের মূল সত্তার কথা। জানা গিয়েছে, ছবির গল্প পরিচালকের নিজের জীবনের স্মৃতি থেকে অনুপ্রাণিত। শীর্ষেন্দু বা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যের মতো ও তরুণ মজুমদারের সিনেমার আবেগঘন এই সিনেমার কাহিনি। ছবিতে বাঙালির হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধ, প্রতিবাদের ধরন এবং অতীতের চিরন্তন প্রেমকাহিনী বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে তুলে ধরা হয়েছে। এবার বাঙালির শিকড়ের আবেগকে কতটা বাস্তবায়িত করতে পারে ‘রাস’, তা দেখা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।