রামের গায়ের রঙ সবুজ! ভাবতে পারছেন? এরকম রামকে দেখেছেন কখনও? হুগলীতে অবস্থিত এক এলাকায় রয়েছে শ্যামল বর্ণের রাম। কিন্তু কোথায়? চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক সেই প্রাচীন গল্প।
জানা গিয়েছে যে হুগলীর গুপ্তিপাড়াতে রয়েছে এই বিশেষ রামের মূর্তি। এই মন্দিরে শুধু রাম নয়, তাঁর পাশে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী সীতা এবং ভাই লক্ষ্মণ। কিন্তু তাঁরা মোটেই শ্যামল বর্ণের নয়, অশতি পুষ্প রংয়ের। এছাড়া তাঁদের সামনে রয়েছে কালো রংয়ের কৃষকায় পবনপুত্র হনুমান।
অন্যদিকে, অযোধ্যায় আজ প্রাণ প্রতিষ্ঠা পেল ‘রামলালা’ অর্থাৎ শিশু রাম। এই বিশেষ দিনেই চলুন জেনে নি হুগলির এই মন্দিরের কথা। জানা গিয়েছে যে আজ এখানেও সারাদিন ধরে চলেছে পুজোপাঠ।
এই মন্দিরের ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানা যাবে যে এখানের রাম, লক্ষ্মণ ও সীতার মূর্তিটি তৈরি হয়েছে নিম কাঠ দিয়ে। রাজা হরিসচন্দ্র রায় এই মন্দির ও মূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন।
এরপর অষ্টাদশ শতেকের শেষদিকে গুপ্তিপাড়ায় বৃন্দাবন চন্দ্র জিউ মঠ তৈরি করা হয়। জানা গিয়েছে যে সেই মঠের চৌহদ্দিতে রয়েছে বৃন্দাবন জিউ, কৃষ্ণ, রামচন্দ্র ও নিতাই গৌরের মন্দির বা জোরা বাংলো।
দেখা যায় যে এখানে রামের মন্দিরটি টেরাকোটার। সেখানেই সারাবছর ধরে নিত্যপুজো হয়।
রামের মন্দির টেরাকোটার। সেখানেই নিত্যপুজো হয় সারাবছর। আগে রামনবমীর দিনে বিরাট উৎসব হত। এখন সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
এখানে বৃন্দাবন জিউ এর জগন্নাথের রথযাত্রা হয় সবচেয়ে ধুমধাম করে। বহু ভক্তের সমাগম হয় এখানে।
অন্যদিকে গুপ্তিপাড়াতের পাটমহলে রয়েছে রঘুনাথ জিউ মন্দির। সেখানে রাম সীতা লক্ষ্মণের মূর্তি পুজো হয়। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রামানন্দ অধিকারী। কিন্তু পরবর্তীকালে ভাগীরথীর গতি পথ পরিবর্তনে মন্দির ধ্বংস হয়ে যায়। পরে সেই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে এসে দূর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করেন। সেখাই রামের পুজো হয়। এছাড়া রামনবমী উপলক্ষে মেলা বসে।
জানা গিয়েছে যে বেণীমাধব শীলের পঞ্জিকায় এই পাট মোহলের রামনবমীর উল্লেখ করা রয়েছে।
এই মন্দির গুলির দেখভাল করে ভারতের পুরাতত্ত্ব বিভাগ।
মন্দিরের কমিটির সদস্য সামন্তক গঙ্গোপাধ্যায় এক সংবাদমাধ্যমের দ্বারা জানিয়েছেন যে পঁচিশ বছর পর অযোধ্যায় রামলালা প্রতিষ্ঠা হবে এতে তাঁরা খুবই খুশি। গুপ্তিপাড়ার রাম মন্দিরে ভক্তরা আসবেন এবং পুজো দেবেন। সারাদিন পুরোহিত থাকবেন। রথযাত্রা ও ভান্ডার লুট বৃন্দাবন জিউ এর বড় উৎসব। গোটা বছরই এই মন্দিরে অগণিত ভক্ত আসেন। রামলালা প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে আলদা করে কোনও ব্যবস্থা হবে না। তবে কেউ পুজো দিতে চাইলে দিতে পারবেন।
পুরোহিত শিববেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে চার মন্দিরেই নিত্য সেবা হয়। এছাড়া প্রাচীন মূর্তি রয়েছে। আগে রামচন্দ্রের পুজো হত আলাদা করে, তবে এখন সেসব হয়না। লোকবল কম থাকায় রামচন্দ্রকে নিয়ে আলাদা করে উন্মাদনা নেই এখন।