জলের তলায় আস্ত ডাকবাক্স। তা আবার চিঠির খবরও রাখে। জাপানের সুসামি সমুদ্রে। জলের পোশাক পরে সমুদ্রের ১০ মিটার গভীরে নেমে তবেই পোস্ট বক্সে চিঠি ফেলা সম্ভব।
সুসামি জাপানের জনপ্রিয় মৎস কেন্দ্র। ছোট্ট এই শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দা মৎসজীবী। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বাস।
জলের তলদেশে পোস্ট বক্সটি কিন্তু সক্রিয়। প্রত্যেক দিন প্রায় এক থেকে দেড় হাজার চিঠি পোস্ট হয় এখানে। প্রেমিক-প্রেমিকা থেকে শুরু করে নিখাদ পারিবারিক চিঠি অনেকেই ভালবেসে রেখে যায় এই ডাকবক্সে। স্থানীয় মানুষ মনে করে জলের তলায় চিঠি পোস্ট করে প্রিয়জনকে পাঠালে তা সম্পর্কে বাড়তি উষ্ণতার ছোঁয়া আনে। কাছের মানুষটি ঠিক কতটা ‘স্পেশাল’ তা বোঝাতে সমুদ্রতলের পোস্টবক্সটিকে ব্যবহার করে বহু মানুষ।
জাপানের অন্য শহরের মানুষ এসেও এই পোস্টবক্সে চিঠি ফেলে যান। তবে সাধারন কাগজ বা খামে চিঠি এখানে দেওয়া যাবে না, চাই বিশেষ ধরনের ‘ওয়াটারপ্রুফ পেপার’। অয়েল পেন্ট কালি দিয়ে লিখতে হবে চিঠি। চিঠিতে বসে ‘আন্ডার ওয়াটার স্ট্যাম্প’।
ডাইভ দিয়ে সমুদ্রে নেমে চিঠি ‘পোস্ট’ করে আসা, অনেকের কাছেই ব্যাপারটা বেশ ‘থ্রিলিং’ ।
১৯৯৯ সালে সমুদ্রের তলায় পোস্ট বক্সটি স্থাপন করা হয়েছিল। সুসামি সমুদ্রকে বাকি পৃথিবীর কাছে জনপ্রিয় করে তোলাই ছিল এই ভাবনার উদ্দেশ্য।
তোসিকো মাৎসুমোসো নামে সত্তরোর্ধ এক পোস্টমাস্টার এমন অভিনব ভাবনার জনক।
প্রত্যেক ৬ মাস অন্তর এই পোস্ট বক্সটির শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া হয়। লাগে নতুন রঙের ছোঁয়া। প্রত্যেক বছর বসে হাল ফ্যাশানের বক্স। সঙ্গে ওয়াটার প্রুফ ব্যাগ।
২০০২ সালে একদিনে ৩২ হাজার চিঠি ‘পোস্ট’ এবং ‘ডেলিভারি’ করে গিনেস বুক অফ রের্কডে নাম নথিভুক্ত করে সুসামি।