ছাত্র ভর্তি নিয়ে সমস্যা এড়াতে এই বছর গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিলো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষকে ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে নোটিশ পাঠানো হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই কলেজগুলিতে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহকেই বেছে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভর্তির পর যাতে খুব তাড়াতাড়ি ক্লাস শুরু করা যায় সেদিকেও নজর দেওয়ার কথা বলেছেন তারা।
প্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তির সময় পিছিয়ে যাওয়ার কারণে শিক্ষকদের সম্পূর্ণ বছরের সিলেবাস শেষ করতে সমস্যা হয়। পড়ার জন্য যথাযথ সময় পাওয়া যায় না বলে ক্ষোভ ছিল ছাত্র ছাত্রীদের মনেও। সেই বিষয়টি যাতে এই বছর না হয় তাই তাড়াতাড়ি ছাত্র ভর্তির সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কলেজের অধ্যক্ষের উদ্দেশ্যে যে নোটিস পাঠানো হয়েছে তাতে ভর্তি সংক্রান্ত তারিখ ইতিমধ্যেই দেওয়া রয়েছে। সেই নোটিস থেকে জানা গেছে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোনোর পরেই ছাত্র ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। আর সব কলেজে ছাত্র ভর্তি প্রক্রিয়া ৬ই জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে হবে এবং ১০ই জুনের মধ্যে মেরিট লিস্ট বের করতে হবে সব কলেজকেই। সম্পূর্ণ অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া সমাপ্ত করতে হবে ১২ই জুনের মধ্যে। প্রতিটি কলেজেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ক্লাস শুরু করতে হবে। কোনো ছাত্রছাত্রী যদি তার পছন্দ করা বিষয় বদলাতে চায় সেই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সময় দেওয়া হয়েছে ১৩ই জুলাই পর্যন্ত।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে এটাও জানানো হয়েছে, ১৬০ টির মতো যে সব অড অ্যাফিলিয়েটেড কলেজগুলি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে যাতে আসন সংখ্যার বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি না নেওয়া হয় সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তি বন্ধ করা যাবে, এমনটাই আশা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এই প্রথমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলিতে আসনসংখ্যা কমানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে| যেসব কলেজে আসন সংখ্যা কমানোর কথা হয়েছে তার মধ্যে ছোট, বড়, নানা কলেজ রয়েছে| শুধু অনার্স কোর্সে নয় এর পাশাপশি পাস কোর্সে পড়বার ক্ষেত্রেও আসন সংখ্যা বেঁধে দিতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, জানালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য| অনার্স কোর্সে ১০ শতাংশ আসন এবং পাস কোর্সে ১৫ শতাংশ আসনের থেকে বাড়ানো যাবে না এমনটাই জানানো হয়েছে| কলেজে শুন্য আসন পড়ে থাকলে তা ‘ন্যাক’-এ স্কোর করার ক্ষেত্রে একধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে মনে করেই এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে|
অন্যদিকে, চলতি শিক্ষাবর্ষের জন্য সমস্ত অ্যাডমিশন যাতে অনলাইনেই করা হয় সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সাথে ভর্তির আগের সমস্ত কথোপকথন করার জন্য ইমেইল বা টেক্সটের উপরেই এবার ভরসা রাখতে দেখা গেছে কলেজগুলিকেও। এর সাথে সাথে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যেও জানানো হয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন বারবার কলেজে গিয়ে নথিপত্র দেখানোরও প্রয়োজন নেই| সবটাই অনলাইনে হবে| ক্লাস শুরুর পর সব ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করে নেওয়া হবে।