আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপর শুরু হতে চলেছে ক্রিকেটের মহারণ, বিশ্বকাপ ২০১৯। তাই সব দলই এখন ব্যাস্ত শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিতে। ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়োজিত হবে এবারের বিশ্বকাপ। আর ইংল্যান্ডের পিচ মানেই তা সারা বিশ্বের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারপর তারাই বর্তমানে ওডিআইতে বিশ্বের এক নম্বর দল। তাই যেকোনো দলকে তাঁদের সেরা পারফর্ম্যান্সটি না দিলে বিপদ অনিবার্য। কিন্তু এত প্রস্তুতির মধ্যেও এমন কিছু দল আছে যাদের মনে করা হচ্ছে, এই বিশ্বকাপে হয়ত তেমন ভাবে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। সেই দলগুলিকে তালিকাভুক্ত করা হল।
১) পাকিস্তান – নিসন্দেহে ১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়ন দল এই বিশ্বকাপের যাকে বলে ‘আন্ডার ডগ’। তার কারণ সম্প্রতি পাকিস্তান যে কটি ওডিআই ম্যাচ খেলেছে তাতে বার বার প্রশ্ন উঠেছে তাঁদের ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে। যেটুকু প্রাপ্তি হয়েছে তা শুধুমাত্র তাঁদের বোলিং লাইনআপের দৌলতে। নিঃসন্দেহে দলে মহম্মদ আমির, মহম্মদ আব্বাসের মত বোলার আছে বলেই হয়ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু শুধুমাত্র বোলিং অ্যাটাক দিয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে জয় পাওয়া সম্ভব নয়, যেখানে ভারত ও আয়োজক দেশ ইংল্যান্ডের মত ব্যাটিং প্রিয় দল আছে।
২) শ্রীলঙ্কা - ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ী দলের বর্তমানে কিছুই যেন ঠিক চলছে না। একসময় বিশ্ব কাঁপানো এই দলের অবনতী দেখা, একজন ক্রিকেট প্রেমীর পক্ষে খুবই কষ্টকর। একসময় যেই দলে জয়সূর্য, সাঙ্গাকারা, জয়ওয়ার্ধান, মুরলিথরণের মত তাবড় তাবড় খেলোয়াড় ছিল বর্তমানে শ্রীলঙ্কার সেই দল যেন হারিয়ে গেছে। ঘরের মাঠে দক্ষিন আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের কাছে হার, নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ৩-০ ওডিআইতে হার। তাই এই বিশ্বকাপে খুবএকটা আশাবাদি নয় শ্রীলঙ্কা। তবে হ্যাঁ ‘মিরাকেল হ্যাপেন্স’।
৩) অস্ট্রেলিয়া- ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল। কিন্তু বর্তমানে দলের পারফর্ম্যান্স দেখলে বোঝা দায় যে এই দলেই একসময় হেডেন, পন্টিং, গিলক্রিস্টের মত ব্যটসম্যান আর ম্যাক গ্ৰা, গিলেস্পি, ব্রেট লি ও শ্যেন ওর্য়ানের মত বোলার ছিলেন। তবে তা ছিল অস্ট্রেলিয়ার স্বর্ণযুগ। ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর যখন সিনিয়ার খেলোয়াড়েরা অবসর নিল, তখন অথৈ জলে এসে পড়ে অজিরা। সম্পূর্ণ নতুন প্রতিভাদের হাতে দলের দায়িত্ব এসে পড়ায় খেঁই হারিয়ে ফেলে টিম পেইন, অ্যারন ফিঞ্চরা। আর দলের সেই অবনতি আরও উস্কে দেয় যখন ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথের মত ব্যাটসম্যান বল বিকৃতি কান্ডের জেরে নির্বাসিত হন। সম্প্রতি ভারতের কাছে টেস্ট ও ওয়ানডেতে ঐতিহাসিক হার আরও একবার প্রমাণ করে দিল পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া ও টিম পেইনের অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে পার্থক্য কোথায়। তবে বিশ্বকাপের আগে দলে ফিরতে পারে ওয়ার্নার ও স্মিথ, তাই কিছুটা হলেও অজিদের ব্যাটিং লাইনআপটি পোক্ত হবে বলে আশা করা যায়।
৪) ওয়েস্ট ইন্ডিজ- ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে পুরোনো দল। তবে সম্প্রতি এই দল যেন কিছুতেই আন্তর্জাতিক দরবারে মেলে ধরতে পারছে না নিজেদের। যত দিন গেছে তত দলের সেই উজ্বলতা ফিকে হয়ে গেছে। বিদেশের মাঠের পাশাপাশি ঘরের মাঠেও নিজের মেলে ধরতে ব্যার্থ হয়েছে জেসন হোল্ডারের দল। উল্লেখযোগ্য, বাংলাদেশের কাছে নিজেদের ঘরের মাঠে ওডিআইতে হার বা ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোয়ালিফাই না করতে পারা বার বার বুঝিয়ে দিয়েছে যে কতটা ছন্দহীন হয়ে পড়েছে ক্যারিবায়ানরা। তবে হ্যাঁ এই দলে এমন কিছু ব্যাটসম্যান বা বোলার আছে যারা একবার ছন্দ ফিরে পেলে যে কোনো দলকে কাঁদিয়ে দিতে পারে। তাই ছন্দহীন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ‘টেকেন ফর গ্র্যান্টেড’ ধরে নেওয়াটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।