খাওয়াদাওয়া থেকে রূপচর্চা, ডিমের উপকারিতার কথা সবক্ষেত্রেই রয়েছে। প্রতিটি গৃহস্থ বাড়ির হেঁশেলেই উপস্থিত থাকে এই সামগ্রীটি। বাড়িতে পছন্দমতো রান্না না হলেও একটি ডিমই পারে সেই সময় আমাদের মনের কষ্ট দূর করতে। সেই মুহূর্তে একটি ডিম তা সে সেদ্ধই হোক বা ভাজা সেই মুহূর্তে স্বর্গসুখ দিয়ে থাকে। কিন্তু এই ডিম যে শুধু একটি পুষ্টিকর খাবার কিংবা রূপচর্চার বস্তু তা ভাবা কিন্তু ঠিক নয়। ডিম যে ঠিক কোন কোন জায়গায় মুশকিল আসান হিসেবে দেখা দিতে পারে তা কল্পনা করাও কঠিন। চলুন আজ ডিমের নানা উপকারিতার কথা জেনে নেওয়া যাক...............
১) শ্যাম্পু করতে গিয়ে দেখলেন কন্ডিশনার শেষ। সেই মুহূর্তে দোকানেও যাওয়া সম্ভব নয়। মুশকিল আসান করতে পারে ডিম। ডিমের কুসুম খুব ভালো কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। শ্যাম্পু করার পর একটি ডিমের কুসুম নিয়ে তাকে আমন্ড তেলের সাথে মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। ফ্যাট ও প্রোটিনসমৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাজারচলতি কন্ডিশনারের থেকে বেশি উপকার পাবেন ডিমের কুসুম থেকে। এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন, ডিম মাখার পর সবসময় ঠান্ডা জলে মাথা ধোওয়া উচিৎ।
২) বাড়িতে বাগান করার শখ থাকলে সেই ক্ষেত্রেও নানাভাবে উপকার করতে পারে ডিম। ডিমের খোসার মূল উপাদান ক্যালসিয়াম।গাছে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে ডিমের জুড়ি মেলা ভার। ডিম সেদ্ধ করার পর সেই জল গাছের গোড়ায় ছড়িয়ে দেওয়া গেলে গাছ তার পর্যাপ্ত পরিমান পুষ্টি পায়। এছাড়াও গাছের গোড়ায় ডিমের গন্ধযুক্ত জল দিলে সেই গাছ থেকে পোকামাকড় দূরে থাকে।
৩) রুপোর গয়না অনেকদিন পড়ে থাকলে সেই গয়না কালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। বাতাসে উপস্থিত অক্সিজেনের কারণে গয়না কালো হয়ে যায়। এই গয়নাকে একেবারে নতুনের মতো করে তুলতে পারে একমাত্র ডিম। রুপোর গয়নাকে আগের রূপে ফেরাতে গেলে প্রথমেই একটি ডিমকে ভালো করে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর ঠান্ডা হলে একে দুইভাগ করে নিয়ে তার থেকে কুসুম আলাদা করে নিতে হবে। এবার সেই কুসুম একটি ঢাকনাযুক্ত পাত্রে রেখে দিয়ে হাত দিয়ে ঝুরঝুরে করে নিন। এবার একটি পেপার টাওয়েল বা টিস্যু পেপারের মধ্যে রুপোর গয়নাগুলো রেখে পাত্রের মুখ ময়দার প্রলেপ লাগিয়ে বায়ুনিরুদ্ধ করে নিন। এইভাবেই দুইদিন রেখে নিন। দুইদিন পরে দেখা যাবে রুপোর গয়না থেকে কালোভাব সম্পূর্ণ উঠে গেছে।
৪) অনেকসময়ই আমাদের এমনভাবে কেটে যায় যে সেখানকার রক্ত বন্ধ করতে সমস্যা হয়। হাতের কাছে যদি ফার্স্ট এড কিট না থাকে তাহলে মুশকিল আসান করতে পারে ডিম। কিভাবে? ডিম সেদ্ধ করে ছাড়ানোর সময় খেয়াল করে দেখলে বোঝা যাবে খোসা এবং ডিমের মাঝে একটি পাতলা পর্দার মতন থাকে। এই পর্দার মতো দেখতে বস্তুটি রক্ত বন্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।কোনো জায়গায় রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে গেলে ডিমের ভিতরে থকা এই পাতলা পর্দার সাহায্য নিয়ে দেখতে পারেন। এই পর্দা ক্ষতস্থানের দাগ মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পুষ্টি মেটাতে যেমন ডিমের চাহিদা তুঙ্গে সেরকমই রূপচর্চা কিংবা ত্বকের যত্নেও ডিমের ভূমিকা অনেক। নানাক্ষেত্রে নানা উপকার করে থাকে ডিম। কিছু উপকারিতা আমাদের জানা কিছু আবার অজানা। আজ জেনে নেওয়া হলো কিছু অজানা উপকারিতার কথা। প্রয়োজনমতো আপনিও এই টোটকাগুলি রোজকার জীবনে কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন।