জল সংরক্ষণে আল্ট্রা ছাতা

পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য দেশ তথা সারা বিশ্ব জুড়েই চলছে প্রচার। পরিবেশ দূষণের সঙ্গে সঙ্গে জলের দূষণও বাড়ছে, বাড়ছে জলের অপচয়। জলের অপচয় রোধ করার জন্য চারদিকে শোরগোল পড়ে গেছে। ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এমন একদিন আসবে, যখন আমাদের খাবার জল থাকবেনা। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে একদিন কিন্তু আজকে জানাবো কিছু তথ্য যার মাধ্যমে জল অপচয় রোধ করা সম্ভবপর হবে।

     ভারতীয় রেলওয়ের দক্ষিণ শাখা অর্থাৎ দক্ষিণ রেলওয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে জল সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে। নতুন এই প্রকল্পের নাম 'আল্ট্রা ছাতা' ওই রেলওয়ের তরফে উল্টানো ছাতা নির্মাণ করা হয়েছে, যা কিনা বৃষ্টির জল ধারণ করতে সক্ষম। অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টকল স্টেশনে দেখা গেছে এই রকম ছাতার।সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে এই ছাতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনও করা হবে আবার তার সঙ্গে বৃষ্টির জল সংরক্ষণও করা যাবে। বড়সড় ছাতার মত দেখতে বলে এখানে বিশ্রামও নেওয়া যাবে আবার আলো জ্বালানো এবং ল্যাপটপ ও মোবাইল চার্জও দেওয়া যাবে এখান থেকে নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে। আপাতত 'টি এরকম ছাতা রাখা হয়েছে স্টেশনটিতে। এই ছাতা তৈরী করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা। প্রতি বছর আনুমানিক ৬০,০০০ জল সংরক্ষণ করতে সক্ষম এই অভিনব ছাতা।

      পাশাপাশি আমাদের রাজ্যে উত্তরবঙ্গে জলের অপচয় রুখতে এগিয়ে এলো কিছু যুবক। আলিপুরদুয়ারের প্যারেড গ্রাউন্ড লাগোয়া এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে পথে নামলেন তাঁরা। পথ চলার সময় যেখানেই দেখছেন কলহীন ট্যাপ থেকে জল পড়ছে, সেখানেই লাগিয়ে দিচ্ছেন বিব কক। যা দেখতে ভিড় করছেন যখন স্থানীয় মানুষ, তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছেন চকোলেট এবং অনুরোধ করছেন জলের অপচয় বন্ধ করতে। বলাই বাহুল্য, জলের অপচয় রোধ করার জন্য সরকারি তরফে আবেদন থাকলেও সাধারণ মানুষ কিন্তু এ ব্যাপারে একেবারেই সচেতন নন। সর্বত্রই দেখা যায়, প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ জলের অপচয় হয়। বেশিরভাগ ট্যাপের মুখে কল না থাকার দরুণ সারাক্ষণ জল পড়ে নষ্ট হয়। এই ঘটনার থেকেই কয়েকজন বন্ধু মিলে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে বিব কক ও চকোলেট কিনে মানুষকে সচেতন করতে পথে নামেন। এই উদ্যোগে খুশি প্রশাসন এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। তাঁদের মতে, এই অভিনব উপায়ে যদি জলের অপচয় বন্ধ করা যায়, সেটা হবে অনেকটাই পাওনা। প্রশাসনের তরফে বিব কক দিয়ে সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। 

      এইভাবে যদি আমরা এগিয়ে আসি, তাহলে অবশ্যই এই সংকট থেকে মুক্তি পাবো। পাশাপাশি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে, পরিচিতজনদের মধ্যে সচেতনতার প্রচার করা। তবেই সকলে মিলে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...