‘ওই কাজল নয়না হরিণী’ বা ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি’ সবক্ষেত্রেই শিল্পীর কল্পনায় প্রাধান্য পেয়েছে চরিত্রের ঘন কালো দুটি চোখ| সেই চোখের মায়াবী দৃষ্টি যখন তখন মুগ্ধ করতে পারে আমজনতাকে| কাজল কালো চোখের মায়ার আবদ্ধ হতে চায় সকলেই আর সেই চোখ দিয়েও সমাজকে বশ করতে চায় নারীরা| কিন্তু সেই কাজল কালো চোখ থেকেই যদি কাজল ঘেঁটে যায় তখন কি হবে?
যেহেতু ইতিমধ্যেই চাঁদিফাটা রোদ উঠতে শুরু করেছে তাই গরমটা ভালই টের পাওয়া যাচ্ছে| বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমান দিন দিন যত বাড়ছে ততই মানুষ ঘামছে কুলকুল করে| আর তার ফলে হচ্ছে মেকআপের দফারফা| মেকআপের মধ্যে চেহারার যে অংশটি সবচেয়ে খারাপ ভাবে ঘেঁটে যায় তা হলো ওই ঘন কালো চোখের কাজল| আর কাজল একবার ঘেঁটে গেলে তখন কিন্তু কেউ ‘কৃষ্ণকলি’ বলে আর ডাকে না তখন তাকে দেখতে লাগে পুরো 'পান্ডা'র মত| যার চোখ দুটি কিন্তু সুন্দর গোল গোল কালো সার্কল করা| আমাদের কাজল ঘেঁটে যাওয়ার ফলে খানিকটা সেরকমই লাগে দেখতে আমাদের| তাই এই গরমে রোদে বেরোনোর আগে আমাদের প্রথম চিন্তা এটাই হয় নিজের চোখের কাজল কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায়| তার জন্য দোকানে গিয়ে নানা দামী দামী কাজল কিনেও শেষমেষ ব্যর্থ হতে হয় আমাদের| কিন্তু সহজ কিছু উপায় অবলম্বন করলে কিন্তু বেশ কিছুক্ষনের জন্য এই কাজল চোখে টিকিয়ে রাখা যায়|
যাদের ত্বক তৈলাক্ত হয় তাদের ক্ষেত্রে কাজল স্মাজ হওয়ার আশংকা বেশি থাকে| তাই কাজল লাগানোর আগে একটি সুতির কাপড়ের মধ্যে এক টুকরো বরফ নিয়ে সেটি যদি চোখের চারপাশে ঘসে ঘসে লাগানো যায় তাহলে চোখের চারপাশে থাকা অতিরিক্ত তেল কমে যায়| রোমকূপগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে অতিরিক্ত তেল বেরোনোর সুযোগও পায় না| চোখের চারপাশে বরফ ঘসার ফলে আই ব্যাগের সমস্যা এবং পাফি আইয়ের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়|
কাজল লাগানোর আগে চোখের উপরে এবং নিচে ভালো করে বিবি বা সিসি ক্রিম লাগিয়ে নেওয়া উচিত| এই ক্রিমও অতিরিক্ত তেলের নিষ্কাশন রোধ করে| ফলে কাজল স্মাজ হতে পারে না| আর এই ক্রিমের ব্যবহারের ফলে চোখের নিচে থাকা ডার্ক সার্কলের দাগও কম দেখায়|
চোখের কোনায় থাকা সেবাম গ্রন্থি থেকে সেবামের নিষ্কাশন ঘটতে থাকে| আর এই সেবামই ধীরে ধীরে চোখের ওয়াটার লাইন বরাবর ছড়িয়ে পড়ে কাজলের স্মাজ হওয়াকে ত্বরান্বিত করে| তাই কাজল লাগানোর আগে চোখের কোনা একটি ইয়ার বাড দিয়ে পরিষ্কার করে নিলে বাড অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় তাই কাজল স্মাজ হতে পারে না|
এছাড়াও কাজল লাগানোর সময় চোখের কোনায় কাজল না লাগানোর চেষ্টা করুন| চোখের উপরে এবং নিচের ওয়াটার লাইনে কাজল লাগান কিন্তু সামনের কোনাটি ছেড়ে| ওই জায়গাটিতেই অশ্রুগ্রন্থির অবস্থান| তাই এই জায়গাটিতেই কাজল ঘেঁটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে|
তাও যদি কাজল ঘেঁটে যেতে থাকে তাহলে কাজলের উপরে আপনি কোনো ওয়াটারপ্রুফ আইলাইনার লাগিয়ে নিন| চোখের কোনায় যদি কাজল দিতেই হয় তাহলে কাজলের বদলে আইলাইনার ব্যবহার করুন| আইলাইনার ওয়াটারপ্রুফ হওয়ার কারণে স্মাজ হওয়ার সুযোগ থাকে না|
সবার শেষে কাজল আইলাইনার সব লাগানো হয়ে গেলে একটু পাউডার ব্রাশের সাহায্যে লাগিয়ে নেবেন| পাউডার অতিরিক্ত তেল শুষে নিতে পারে ফলে কাজলের স্মাজ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে|
এইভাবেই এই গরমে নিজের চোখকে করে তুলুন আরও আকর্ষনীয় এবং সুন্দর| শুধুমাত্র এই স্টেপ গুলি ফলো করে|