থেমে গেল ক্যানসারের সাথে দীর্ঘ লড়াই!
প্রয়াত হলেন অনীক দত্তের পরিচালিত ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ ছবির আত্মারাম, ওরফে টলিপাড়ার বর্ষীয়ান অভিনেতা উদয়শঙ্কর পাল। সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। শোকের ছায়া ছড়িয়ে গোটা টলিপাড়ায়।
প্রায় দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের ক্যানসার ভুগছিলেন উদয়শঙ্কর। খুব অল্পবয়স থেকেই নাট্যমঞ্চে নিজের কেরিয়ায় শুরু করেছিলেন তিনি। প্রায় তিন দশক নিয়মিত মঞ্চে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন অজস্র বাংলা ছবিতে। তবে, পরিচালক অনীক দত্তের পরিচালিত ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ ছবিটি থেকে সকলের কাছে অতি পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। এছাড়াও তিনি রয়েছে ‘রয়েল বেঙ্গল রহস্য’, ‘চতুষ্কোণ’, ‘প্রফেসর শঙ্কু ও এল্ ডোরাডো’, ‘আশ্চর্য প্রদীপ’, ‘শজারুর কাঁটা’-র মতন বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
বিয়ে করেননি উদয়শঙ্কর। ফলে, হাওড়ায় দাদার পরিবারেই থাকতেন তিনি।
‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ ছবিতে উদয়শঙ্করের সহ-অভিনেতা ছিলেন সুমিত সমাদ্দার। দুঃসংবাদ পেয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে তাঁরা একসঙ্গে একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর সাথে রয়েছে অনেক স্মৃতি। তবে, নাট্যজীবন নিয়ে দর্শক বিশেষ একটা জানেন না বর্ষীয়ান অভিনেতার বিষয়ে।
সম্প্রতি পরিচালক অভিজিৎ পাল প্রথম সমাজমাধ্যমে উদয়শঙ্করের শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান। প্রথমে হাওড়ার একটি নার্সিংহোমে অভিনেতার চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু ক্যানসারের চিকিৎসা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ চিকিৎসা। যেটা করানোর ক্ষমতা উদয়শঙ্করের ছিল না।
এরপরেই অভিনেতা দেবদূত ঘোষ এবং পরিচালক শৈবাল মিত্রের উদ্যোগে আর্টিস্ট ফোরামের তত্ত্বাবধানে উদয়শঙ্করকে দক্ষিণ কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে বয়সজনিত কারণে অভিনেতার চিকিৎসা করার একটা ঝুঁকি রয়েছে। এরপরেই মেলে দুঃসংবাদ।
সোমবার অভিনেত্রী তথা পরিচালক মানসী সিনহা উদয়শঙ্কর পালের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, 'ভালো থেকো উদয়মামা। সাবধানে যেও। প্রণাম নিও।' তাঁর পোস্টের কমেন্টে পরিচালক অনীক দত্ত শোকপ্রকাশ করে লেখেন, 'উদয়দা, ডাবিংটা আর হল না... আমাদের চেষ্টা বৃথা গেল।'
এদিন অনীক দত্ত একটি পোস্টে লেখেন, 'আমার প্রথম কাজ থেকে শুরু করে, উনি প্রায় আমার সমস্ত ছবিতে ছিলেন শেষ কাজটা নিয়ে (যার ডাবিং এখনও বাকি)। আমরা আমাদের সামর্থ অনুযায়ী অনেক চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধে তিনি হেরে গেলেন।'