"এক লড়কী কো দেখা তো আয়সা লগা" -
এই গানটার প্রথম দুই কলি শুনলেই কি আপনার মনে পড়ে যায় না, সেই মিষ্টি প্রেমের গল্প? মনে পড়ে যায় না, সেই গানের কলি মেলানো প্রেম? এটাই খুব স্বাভাবিক মশাই। যখন সিনেমাটি খানিক চানাচুর সহযোগে দেখতে বসেছিলাম, তখন বেশ আমারও মনে হয়েছিল 'না থাক একটা সরল সহজ সিনেমাই দেখি', কিন্তু না আমার মতো আপনিও অবাক হবেন একটু পরে। ক্রমশ প্রকাশ্য বন্ধু।
সোনম কাপূর আহুজা, অনিল কাপূর, রাজকুমার রাও ও জুহি চাওলা সিনেমায় এক অনন্য স্বাদ তৈরী করেছে। বাবা ও মেয়েকে পর্দায় একসাথে দেখতে কিন্তু দারুন লাগে। তাদের দুজনের অভিনয় এতটাই সাবলীল যে মুখে পাতলা হাসি আসবেই। তার সাথে রাজকুমার রাও - এর অনবদ্য অভিনয়। তার কাজ আমাদের অবাক করে না, কারণ তিনি আমাদের অসাধারণ অভিনয় উপহার দেবেনই তা আমরা জানি। অনেকদিন পর জুহি চাওলাকে পর্দায় দেখে ও তার সেই আগের স্বাদে ফিরে আসতে দেখে আমার মতো সমস্ত দর্শকের মন ভরে যায়। মূল চরিত্রগুলির অভিনয় নিয়ে কিছুই বলার থাকে না আর। তারা সবাই সফল অভিনেতা - অভিনেত্রী।
সিনেমাটি শুরু হয় একটা বিয়ের পরিবেশ দিয়ে। চিরাচরিত বলিউড নিয়মেই গান, নাচ দিয়েই শুরুটা হয়। বাবা ও মেয়ের ভূমিকায় সোনম ও অনিল কাপূর একেবারে খাপ খেয়ে গেছে। সিনেমাটির প্রথম ভাগেই একটা মিষ্টি প্রেমের গল্পের সুর থাকে। প্রধানত সুইটির প্রেম জীবনের টানাপোড়েন নিয়ে। গল্প যত এগোতে থাকে ততো বোঝা যায় এটা স্বাভাবিক কোনো সরল প্রেমের কাহিনী নয়। রাজকুমার রাও (সাহিল) এর সাথে সুইটির দেখা একটা নাটকের রিহার্সালে এবং সবারই মনে হয় যে তার সাথেই একটা প্রেমের গল্প তৈরী হচ্ছে। কিন্তু সিনেমার মধ্যভাগে যখন সুইটির পরিবার তার প্রেমিককে সায়েস্তা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে এবং সাহিলও সাথে সাথে সুইটির কাছে প্রেম নিবেদন করতে উদ্যত হয় তখন সুইটি সমস্ত বাধা ভেঙে বলে যে সে ভালোবাসে একজন মেয়েকে। হ্যাঁ, আমিও মুখ বড় করে তাকিয়ে ছিলাম স্ক্রিনের দিকে। সিনেমার মধ্যভাগ থেকেই গল্প দৌড়োতে থাকে।
সাহিল একজন উঠতি নাট্যকার ও পরিচালক তা সিনেমার শুরুতেই দেখানো হয়। সে সিদ্ধান্ত নেয় সুইটি ও তার প্রেমিকাকে সে সাহায্য করবে। সে ঠিক করে একটা নাটকের মাধ্যমেই সে সুইটির জীবনের গল্প বলবে, বলবে সুইটি ১৪ বছর বয়েস থেকে বুঝতে পেরেছিলো তার অনুভূতির কথা। তখন থেকেই নিজেকে ডায়েরির মধ্যে বন্দি করতে থাকে। তার সমস্ত আবেগ লিখে রাখলে ডায়েরিতে। কেউ ছিল না তাকে সাহায্য করার বা তাকে বোঝানোর যে এটা কোনো অপরাধ নয়, এটা স্বাভাবিক। সাহিল তার নাটকের মধ্যে দিয়ে তা 'মোগা' শহরের মানুষদের ও সুইটির পরিবারকে বোঝাতে চায়। সিনেমার শেষে পরিবারের দিক থেকে বাধা আসে, দর্শকরা বাধা দেয় কিন্তু সমস্ত বাধা কাটিয়ে নাটকের শেষে অনিল কাপূর অর্থাৎ সুইটির বাবা মেয়ের আবেগ বুঝতে পারে ও তাকে সমর্থন করেত মঞ্চে উঠে বলে যে এটা একটা সহজ ভালোবাসা, জটিল কিছুই নয়।
সিনেমার পরিচালক শেলী চোপড়া ধর বলিউডের চিরাচরিত প্রেমের নিয়ম ভেঙে, সত্যিই একটা প্রেমের কাহিনী বলেছে যা এই সময়ে খুবই প্রযোজ্য ও যুক্তিসঙ্গত।