পৃথিবীর উচ্চতম শিব মন্দির তুঙ্গনাথ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহাভারতের অর্জুন

পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম শিব মন্দির হল তুঙ্গনাথ মন্দির।  'তুঙ্গনাথ' শব্দের অর্থ হল 'শৃঙ্গ কুলের দেবতা'। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ৩৬৮০ মিটার। সম্পূর্ণ গ্ৰানাইট পাথর দিয়ে নির্মিত মন্দিরটির দেওয়ালে তামা ও সোনা দিয়ে বিভিন্ন কারুকার্য করা হয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে একটি শিব লিঙ্গ আর মূর্তির পিছনে আছে একটি শঙ্করাচার্যের চিত্র। মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি নন্দী মূর্তি। শঙ্করাচার্যের আমল থেকেই মন্দিরের পুজোর দায়িত্ব সামলে আসছেন দক্ষিণী ব্রাহ্মণরা।

 

Tungnath1

 

হিন্দুদের বিশ্বাস, মহাভারতের যুদ্ধের পর পান্ডবরা নিজেদের পাপ মোচন করতে ভগবান শিবের পুজো দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই জন্য বারাণসীতে পুজো দিতে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সেখানে শিবের দর্শন পাননি তারা। শিব তাদের ধরা দেবে না বলে মহিষরূপ নিয়ে উত্তরাখণ্ডের গুপ্তকাশীতে গিয়ে লুকিয়ে পড়েন। পান্ডবরা সেই কথা জানতে পেরে উত্তরাখণ্ডে এসে অনেক চেষ্টা করে শিবের দেখা পাওয়ার জন্য। কিন্তু তাও শিবের পুজো দিতে পারেনি তারা। তবে এক স্থানে তারা মহিষরূপী মহাদেবের লেজ ও শিং স্পর্শ করতে পেরেছিলেন। পরে এই স্থান পঞ্চকেদার নামে পরিচিত হয়। কথিত আছে, তুঙ্গনাথের মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অর্জুন। এই তুঙ্গানাথ আবার তৃতীয় কেদার নামেও বিখ্যাত। লঙ্কাধীপতি রাবণও এখানে পুজো দিতে আসতেন।

 

Tungnath2

 

প্রতিবছর শ্রাবণ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে এই মন্দিরে। সেই সময় বহু মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায় এখানে। তবে শীতকালে বরফ জমার ফলে এখানে বেশি মানুষ আসেন না। সেই সময় মন্দির একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে মে থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত বহু শিব ভক্তের ভিড় দেখতে পাওয়া যায় এখানে। ধর্মীয় স্থান বলে এখানে আমিষ জাতীয় খাবার পাওয়া যায় না। শুধু মাত্র নিরামিষ খাবার পাওয়া যায়। এখানে আসতে হলে প্রথমে কলকাতা থেকে ট্রেনে হরিদ্বার আসতে হবে। তারপর সেখান থেকে চোপতায় আসতে হবে। চোপতা থেকে তুঙ্গনাথ মন্দিরের দূরত্ব মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...