রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল তিন তালাক বিল

 

গত বৃহস্পতিবার ২৫জুলাই প্রায় দিনভর বিতর্কের পর ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গিয়েছিল তিন তালাক বিল| মুসলিম শরিয়তি আইন অনুযায়ী মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনো স্বামী তার স্ত্রী কে তিনবার তালাক দিলেই সেটা বৈধ। অর্থাৎ তিন বার 'তালাক' বলে দিলেই বিবাহ বিচ্ছেদ আইনসিদ্ধ হয়ে যায়। এই তালাক ফোনে বললেও বৈধ বলে গণ্য করা হত। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, আজকাল হোয়াটস আপ করেও তালাক দিয়ে দিত মুসলিম পুরুষেরা। শরিয়তি আইনে এই প্রথাকে বলা হয় তালাক- এ-বিদ্দত। এই প্রথাকেই বেআইনি ঘোষণা করে শাস্তির বিধানের প্রস্তাব রয়েছে তিন তালাক বিলে। তিন তালাক দিলে স্বামীর কারাবাসের বিধানও রয়েছে, অর্থাৎ তালাক দিলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

          প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সংসদে বিল পেশ করেছিলেন আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। তাঁর মতে, পাকিস্তান, মালয়েশিয়ার মতো অন্তত ২০টি মুসলিম দেশে তালাক নিষিদ্ধ। তাহলে ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে তা নিষিদ্ধ হওয়াতে কোনো সমস্যা নেই বলে জানান তিনি। যে সব দেশে শরিয়তি আইন চালু, সেই সব দেশেও তালাক ফৌজদারি অপরাধ। সেদিন বিরোধী পক্ষ থেকে যথেষ্ট বিরোধিতা এসেছিল, এমনকি সরকার পক্ষের জোটেও ছিল কিছু বিরোধী সুর। তার মধ্যেই ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে যায় এই বিল। আশংকা ছিল রাজ্যসভায় আদৌ বিলটি অনুমোদন পাবে কি না তাই নিয়ে।

        গতকাল মঙ্গলবার ৩০জুলাই বহু বিতর্কিত মুসলিম মহিলা(বিবাহের নিরাপত্তা অধিকার) বিল বা তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিলে ছাড়পত্র দিল রাজ্যসভা। সংসদের উচ্চকক্ষে ৯৯-৮৪ ভোটের ব্যবধানে বিলটি পাশ হয়। এবারে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সম্মতি পেলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে। সেক্ষেত্রে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। পাশাপাশি দোষী সাব্যস্ত হলে তালাক দাতার তিন বছরের কারাদণ্ডও হতে পারে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ এই মর্মে জানান, আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। মুসলিম মহিলাদের ন্যায় পাইয়ে দিতে দুই কক্ষ সক্ষম হয়েছে। এটা 'ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়ার সূচনা' প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি সহ সকলেই স্বাগত জানিয়েছেন বিলটি পাশ হয়ে যাওয়ায়।  

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...