চারপাশে ভোটের জোয়ার। নির্বাচন-এর ক্ষেত্রে ভোট যুদ্ধ অবধারিত কিন্তু তারই সাথে রয়েছে কিছু সম্প্রীতিও। যেমনটা পাওয়া যাচ্ছে শাড়ির ডিজাইনের হাল ফ্যাশনে। পছন্দের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে দলের লোগো প্রিন্ট করা শাড়ি। একই ডিসপ্লেতে সাজানো মমতা, মোদী এবং প্রিয়ঙ্কার ছবি সহ ছাপা শাড়ি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবার পরপরই নিউমার্কেটের একটি দোকানে একই সাথে জায়গা করে নিয়েছেন রাজনৈতিক দলের বিশিষ্টদের ছবি দেওয়া শাড়িগুলি। সিদ্ধি দেখবার জন্যই পথচারীরা থমকে দাঁড়িয়ে পড়ছেন এমন অভিনব শাড়ির ছাপা দেখে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছবি দিয়ে ছাপানো শাড়ির দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি। গুজরাটে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার ছবি দিয়ে ছাপানো শাড়ি যার নাম 'মোদী শাড়ি'। সে পথ অনুসরণ করে সুরাট এর বাজারে এসেছে প্রিয়াঙ্কা - রাহুল শাড়ি। কলকাতার নিউমার্কেটের এই শাড়ির দোকানে যোগ করে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে 'মমতা শাড়ি'। তিনটি রাজনৈতিক দলের শাড়িই মিলছে এই দোকানে। শাড়ির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে হাজার থেকে বারোশো টাকার ভিতরে। কিন্তু ভোট বাজারে এই শাড়ির চাহিদা কেমন? দোকানদার জানালেন বেশ ভালো চাহিদা এসব শাড়ির। কোন সোলের শাড়ি সব থেকে বেশি বিক্রি হল সে বিষয়ে না জানালেও একদিনে তৃনমূল এবং বিজেপির শাড়ি যে বেশ ক'পিস্ বিক্রি হয়ে গেছে সেটা বেশ আনন্দের সাথেই জানালেন তিনি। নিউমার্কেটের এই শাড়ি বিক্রেতা জানালেন কোন রাজনৈতিক দলের বায়নায় নয় বরং নিজের ইচ্ছেতেই এমন শাড়ির সমাহার নিয়ে বসেছেন তিনি। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন চলচ্চিত্র অভিনেতাদের নিয়েও এমন শাড়ির দোকান দিয়েছেন। নিজে হাতেই ফুটিয়ে তোলেন সবটা। ২০১৪ র লোকসভা নির্বাচনের শেষের দিকে তিনি এমন রাজনৈতিক দলের প্রতীকী শাড়ি বিক্রয় করা শুরু করেন কিন্তু সেবার ভোটের খুব কাছাকাছি সময় এ ধরনের শাড়ি বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাই ভালো বিক্রি হয় নি। এবার নির্বাচনের দিন ঠিক হতেই মুখ্য দলগুলোর প্ৰতিক আর রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছবি করা শাড়ি নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি। তৃনমূল-বিজেপি শাড়ির দলে যোগ দিয়েছে কংগ্রেস এবং সিপিএম শাড়িও। গুজরাত থেকে নিয়ে আসা 'ক্রেপ' এবং মুম্বাই থেকে নিয়ে আসা 'মিক্সড সিল্ক' দিয়ে তৈরী করা হয়েছে শাড়িগুলি।
কলাপাতা রঙের শাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, হলুদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদী আর সাথে সার্জিকাল স্ট্রাইক, সাদা-কালোয় হাত চিহ্ন আর প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং খয়েরিতে আঁকা কাস্তে হাতুড়ি ; এমনি সব নকশায় ছাপানো ভোট ফ্যাশনের শাড়ি। নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের পছন্দ এবং সম্মান জানানো, এ দুইটি কারণ মাথায় রেখে শাড়ি কিনছেন অনেকেই। শাড়ি না কেনবার থাকলেও শুধুমাত্র শাড়ির ডিসপ্লে টি একবার নিজের চোখে দেখতেও দোকানে একবার ঢুকেই পড়ছেন অনেকেই।