সমাজ ওদের সমানাধিকার দিতে চায় না। স্বাভাবিক মানুষের মর্যাদা দেওয়ার প্রশ্নেও বড় কঠিন হৃদয় এই সমাজের। অথচ আইন পাশ হয়। কিন্তু আইন কী পারে রাতারাতি সমাজের মন বদলে দিতে? পারে না। তাই ওদের লড়াইটা চলতেই থাকে। রূপান্তরকামী মানুষদের মর্যাদা আর সম্মান আর অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এই লড়াইতে একজনের নাম আলাদা করে এসেই পড়ে। তিনি এই আন্দোলনের অন্যতম ঋত্বিক বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই ‘ঋতু উৎসব’।
এই উৎসবে রূপান্তরকামী মেঘ সায়ন্তনী ঘোষের পরিচালনায় মঞ্চস্থ হতে চলেছে ‘মহামানবী’। মহাভারতের এগারোটি নারী চরিত্রকে মঞ্চে উপস্থাপন করবেন এগারোজন রূপান্তরকামী শিল্পী। ‘মহামানবী’ নাটকটিতে সমাজের রূপান্তরকামীদের অবস্থান এবং তাদের অধিকার তাদের লড়াই ইত্যাদি বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। নাটকটির ভাবনা এবং পরিচালনা করছেন মেঘ সায়ন্তনী ঘোষ। রাজ্যের প্রথম মহিলা রূপান্তরকামী আইনজীবী মেঘ সায়ন্তনী ঘোষ।
মেঘ সায়ন্তনী পেশায় আইনজীবী হলেও প্যাশনে নৃত্যশিল্পী ।
মেঘ সায়ন্তনী ঘোষ বলেন, সমাজের জাতপাত, ধর্ম, লিঙ্গ বৈষম্য সব কিছুর ঊর্ধ্বে ‘মানুষ’। মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। রূপান্তরকামী মানুষরাদেরও সমাজে সকলের মত সমান ভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। তারাও যেন সমাজে সকলের মত তাদের প্রতিভা সবার সামনে প্রকাশ করতে পারে।
রুপান্তরকামী মানুষরা যাতে নিজেদের প্রকাশ করতে পারেন, তার জন্য মেঘ সায়ন্তনী তিনি নতুন প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন। নাম দিয়েছেন ‘রুদ্র পলাশ’। এই প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে রূপান্তরকামীরা সমাজের বুকে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে বলে আশাবাদী ‘মহামানবী’র পরিচালিকা। গত সাত বছর ধরে ঋতুপর্ণ ঘোষ- এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে 'রুদ্রপলাশ' অনুষ্ঠান করে আসছে।
‘মহামানবী’ নাটকটির ভাষ্য লিখন করেছেন ভাস্বতী দত্ত। সহকারী পরিচালিকা নৃত্যশিল্পী ইন্দ্রানী গঙ্গোপাধ্যায়। সেপ্টেম্বরের তিন তারিখ বিকেল চারটের সময় কলকাতার আই. সি.সি.আর হল -এ মঞ্চস্থ হবে ‘মহামানবী’।