ঋতু পরিবর্তনের সময় গলার ব্যাথার স্বীকার হননা এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। ডাক্তারের কাছেও ছুটতে হচ্ছে অনেকসময়। ডাক্তার পরীক্ষা করে জানাচ্ছেন টনসিলের সমস্যা হয়েছে। টনসিল হল, গলার শেষপ্রান্তে অবস্থিত দুটি মাংসপিন্ড জাতীয় টিস্যু। এই টনসিল নাক কান গলা দিয়ে যাতে কোনো জীবাণু অন্ত্রে যাতে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য পাহারাদারের কাজ করে এই টিস্যুটি। পাহারা দিতে দিতে বারবার নানা ভাইরাসের সম্মুখীন হয় এই টনসিলে। তার ফলেই সংক্রমণ এবং তার থেকে হয় ব্যাথা। সর্দিকাশির জন্য দায়ী জীবাণুগুলিই সাধারণত টনসিলের ব্যাথার জন্য দায়ী হয়ে থাকে। ব্যাথা কমানোর জন্য বাজারচলতি নানা ওষুধ প্রচলিত থাকলেও অনেকেই ঘরোয়া উপাচারের উপরেই ভরসা রাখেন। ঘরোয়া উপাচারগুলির মধ্যে হলুদ মিশ্রিত দুধ, নুন জল, আদা চা প্রভৃতি যথেষ্ট উপকারী বলে মনে করা হয়।
গলা ব্যাথা কমানোর জন্য সবচেয়ে উপকারী হল উষ্ণ গরম জলে নুন দিয়ে গার্গেল করা। এতে গলার ব্যাথা যেমন কমে তার সাথে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকেও মুক্তি মেলে। দিনে ৩ থেকে ৪ বার পান করুন আদা দেওয়া চা। গলার ব্যাথার জন্য আদা চা বেশি উপকারী। এছাড়াও যেকোনো গরম জিনিস অল্প অল্প করে চুমুক দিয়ে খেলে গলা ব্যাথায় উপকার পাওয়া যায়। টনসিলের ব্যাথা কমানোর জন্য অন্য উপকারী আরেকটি জিনিস হল মধু। মধুর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ধর্ম টনসিলের সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলে এক চামচ লেবুর রস, এক চিমটে নুন ও এক চামচ মধু মিশিয়ে যতদিন না গলা ব্যাথা কমে ততদিন খেয়ে যান। সংক্রমণ খুব তাড়াতাড়ি কমে যাবে। গ্রীন টি'র সাথে মধু মিশিয়ে গরম গরম অল্প অল্প করে চুমুক দিয়ে খেতে থাকুন। গ্রিন টিতে থাকে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট যা শরীরকে ক্ষতিকর জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। আরোও একটি উপকারী জিনিস হলো দুধ ও হলুদের মিশ্রণ। দুধের মধ্যে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে সেই হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করুন। হলুদের উপকারী গুনের কথা কারোর অজানা নয়। সেই প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে হলুদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই ক্ষেত্রে ছাগলের দুধের সাথে হলুদ মেশালে ভালো কিন্তু নেহাত ছাগলের দুধ না পেলে গরুর দুধে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। এইসব ঘরোয়া টোটকা মেনে চলার পরও যদি কোনো উপকার না হয় তবে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।