রাজ্যে সম্প্রতি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তা স্তিমিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। জমে থাকা রোগীদের সামলাতে পেরেছেন ডাক্তারেরা। এরই মধ্যে ১লা জুলাই তারিখে ডক্টর'স ডে-র দিন এসএসকেএম-এর বিসি রায় ট্রমা সেন্টারের উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেন্টারটি উদ্বোধন করে তিনি জানান, এটি রাজ্যের প্রথম লেভেল-এর ট্রমা কেয়ার সেন্টার। রাজ্যের নামি চিকিৎসকেরা এখানে চিকিৎসা করবেন। জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজগুলির চিকিৎসকদের বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান প্রদান করা হবে।
২৪৪ শয্যা বিশিষ্ট এই ট্রমা সেন্টারটি দেশের প্রথম সারির ট্রমা কেয়ার সেন্টারগুলোর মধ্যেও আধুনিকতম বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হলেও 'ট্রমা কেয়ার টিম' এখনও সেভাবে গড়ে ওঠেনি|
২০১১ সাল থেকে এই হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রথমে পরিকল্পনা ছিল যদিও ২০০টি শয্যার ব্যবস্থা করা। কিন্তু আর্থিক অপ্রতিকূলতার জন্য ২০১৫ সালে প্রাথমিকভাবে ৫০টি শয্যা নিয়ে ট্রমা কেয়ার পরিষেবা চালু হয়। পরে ২০১৭ সালে পূর্ণাঙ্গ ট্রমা কেয়ার পরিষেবা চালু করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ট্রমা কেয়ারের জন্য কয়েকজন পৃথক চিকিৎসক, অন্তত ৫০ জন প্রশিক্ষিত নার্স এবং ৪৫ জন টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। এছাড়া আপৎকালীন পরিষেবার জন্য বেশ কিছু প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন।
প্রায় ১ লক্ষ বর্গফুট জায়গা নিয়ে তৈরী হয়েছে এই প্রকল্প। ১১তলা ভবনের এই প্রকল্পে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তবে প্রাথমিকভাবে ১৪০ টি বেড চালু হয়েছে। ২৪ ঘন্টা পরিষেবা দেওয়ার জন্য এই ট্রমা কেয়ারে ছ'টি অপারেশন থিয়েটার, পোর্টেবল আল্ট্রাসনোগ্রাফি সহ আছে বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি। যে কোনো অবস্থায় দ্রুত পরিষেবার জন্যই এই ট্রমা কেয়ার খোলা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লির এইমস-এর ধাঁচে প্রাইভেট ওয়ার্ড তৈরী করা হচ্ছে। তবে রোগীরা সরকারি চিকিৎসকদের কাছেই পরিষেবা পাবেন। এই ওয়ার্ড থেকে যে অর্থ আসবে, তার ৭৫ শতাংশ হাসপাতালের পরিকাঠামোর জন্য খরচ করা হবে এবং বাকি ২৫ শতাংশ পাবেন ডাক্তার-নার্সরা। রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝে লাল, হলুদ, সবুজ ওয়ার্ডে রাখা হবে। প্রত্যেক ওয়ার্ডের জন্য আলাদা চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানের দল গঠন করা হয়েছে। ধাপে ধাপে গোটা রাজ্যেই এই রকম মডেল তৈরী করা হবে। নামি ও অভিজ্ঞ ডাক্তারেরাই সেখানে চিকিৎসা করবেন আবার পাশাপাশি টাকা দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য প্রাইভেট ইউনিটও থাকবে। এসএসকেএম-এর ক্যান্সার ইউনিট অনেক উন্নত করতে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। নতুন নতুন কি কি গবেষণা চলছে ক্যান্সার চিকিৎসা ক্ষেত্রে সেই বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে ডাক্তারদের। এখানে ত্রিস্তরীয় জরুরি বিভাগ থাকবে। পিপিআর মডেলের এমআরআই, সিটিস্ক্যানের পাশাপাশি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, ডিজিটাল রেডিওগ্রাফি, পোর্টেবল এক্স রে, ইউএসজি পয়েন্ট অফ কেয়ার ল্যাবরেটরি এবং ক্যাথ ল্যাব থাকবে।
দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ের রোগীর চিকিৎসা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সেই সময়ের জন্য অভিজ্ঞ লোকের যথেষ্ট প্রয়োজন। তাই সেই মত পরিষেবা যাতে দেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে। এইভাবে বিভিন্ন রকমভাবে যাতে এসএসকেএম হাসপাতালকে যথেষ্ট উন্নতমানের পরিষেবা প্রদানকারী অত্যাধুনিক হাসপাতালে পরিণত করা যায়, তার সব রকম ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।
Inauguration of the first Level 1 Trauma Care Centre of West Bengal & Awarding Bishista Chikitsha Samman to Eminent Doctors | পশ্চিমবঙ্গের প্রথম লেভেল ১ ট্রমা কেয়ার সেন্টার উদ্বোধন এবং সম্মানীয় চিকিৎসকদের বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান প্রদান >> https://t.co/GfDM1CH00N
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 1, 2019