সাহিত্যের বিভিন্ন পুরস্কারের মধ্যে একাডেমি পুরস্কার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি পুরস্কার। সাহিত্যে তেমন দখল না থাকলে এই পুরস্কার পাওয়ার তালিকায় কেউ আসেন না। যারা লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের মধ্যেও অনেকেরই এই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা থাকেনা। অথচ অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্বেও শুধুমাত্র নেশার তাগিদে লিখে, লেখার মান এতোই উন্নত পর্যায় নিয়ে গেছেন এবারের অন্যতম সাহিত্য একাডেমি প্রাপক শ্যাম বেসরা যে ওই পুরস্কার ছিনিয়ে নিলেন। রেলের টিকিট পরীক্ষক হিসেবেই দেখা যায় তাঁকে। ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার আমবাগানের বাসিন্দা শ্যাম বেসরা আসানসোলে টিকিট পরীক্ষকের কাজ করেন। যথেষ্ট অভিজ্ঞ এই টিকিট পরীক্ষক কাজের জগতেও যথেষ্ট দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করেন। আবার কাজের মাঝেই তিনি তাঁর পছন্দের জায়গাতেও সমান স্বচ্ছন্দ। কখনও স্টেশন চত্বরে বসে বা কখনও ট্রেনে বসেই তিনি লেখালেখির কাজ করেন। ইতিমধ্যেই তিনি ৬টি বই লিখেছেন। তাঁর দুটি গল্পের বই সিধু কানু মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হচ্ছে।
১৯৮০ সাল থেকেই তিনি লিখছেন বলে জানিয়েছেন। এর আগেও বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তবে সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পাওয়া আলাদাই গর্বের। 'মারম'(ওয়াচ টাওয়ার) নামক উপন্যাসের জন্য তিনি এই পুরস্কার পাচ্ছেন। সাঁওতালি ভাষায় লিখে সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পাওয়া তাঁর কাছে অনুপ্রেরণার মত। আরো লেখার উৎসাহ পাচ্ছেন তিনি। এখন শ্যামবাবু কমার্শিয়াল ইন্সপেক্টর হিসেবে আসানসোল স্টেশনে কাজ করেন। লেখেন ট্রেনে বসেও। যাত্রীদেরও পড়ে শোনান। কখনও তাদের অনুরোধে বাংলায় বা ইংরিজিতে অনুবাদ করেও শোনান। ৫ তারিখেই তিনি এই পুরস্কারের কথা শুনতে পান। তাঁর এই স্বীকৃতিতে খুশি আসসোল ডিভিশনের রেলকর্মী ও আধিকারিকেরা। ডিআরএম প্রশান্ত কুমার মিশ্র-ও যথেষ্ট খুশি হয়েছেন তাঁর এই পুরস্কার পাওয়ায়। রেলের তরফ থেকেও শ্যাম বেসরাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।