ঐতিহ্যশালি চন্দননগর

হুগলী জেলায় ৯ বর্গ কিলোমিটারের একটি ছোট্ট মহকুমা শহর। এক কালে এই শহর ছিল ফরাসি বণিজ্যিকদের আখড়া। একসময়  পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বাণিজ্য স্থল ছিল এই শহর। ফরাসিদের আড্ডা ছিল বলে এই শহরের আরেকনাম ছিল ফরাসডাঙা।জানা যায় অতিতে বিপুল পরিমানের চন্দনকাঠের ব্যবসা হত বলেই এই শহরের নাম হয় চন্দননগর।

কেন যাবেন চন্দননগর?

এই শহরের আপাদমস্তক ফরাসি ধাচে তৈরী। নিকাশি ব্যবস্থা থেকে রাস্তাঘাট সবেতেই পাবেন ফরাসি আমলের প্রতিচ্ছবি। তাছাড়া ফরাসি উপনিবেশ থাকার দরুন এই শহর ছিল বাংলার বিল্পবীদের গা ঢাকা দেওয়ার অন্যতম স্থল। আলিপুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত শ্রী অরবিন্দ ও অন্যান্য বিল্পবীরা ইংরেজদের হাত থেকে বাঁচার জন্য এই শহরে পালিয়ে আসেন। ফরাসিশাসিত অঞ্চল ছিল বলে ইংরেজরা অত সহজে এই শহরে প্রবেশ করতে পারতেন না।

কি কি দেখবেন?

চন্দননগর স্ট্র্যান্ড পার্ক – হুগলী নদীর তীর বরাবর সুসজ্জিত রাস্তা, বৃক্ষরাদির ছায়ায় এক মনরোম পরিবেশ আপনাকে মাতিয়ে দেবেই।

Stand-road

চন্দননগর মিউজিয়াম – এককালে ফরাসি শাসন ছিল বলে এই মিউজিয়ামে তখনকার দিনে ফরাসিদের ব্যবহৃত জিনিস আজও স্বযত্নে রাখা আছে।

mesuam

ফরাসি সমাধিস্থল - বহু ফরাসি শবদেহের সাক্ষি এই সমাধিস্থল। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হল ফরাসি ছিটমহলের শ্রষ্ঠা কম্যান্ডার ডুপ্লেসিসের সমাধি। বিভিন্ন ফুল দিয়ে সাজানো এই সমাধিস্থল আকর্ষণ করে সাধারণ মানুষকে।

somadhisthol

চন্দননগর গেট – শহরের দক্ষিনের প্রবেশদার ও উত্তরে প্রবেশদারের প্রত্যেকটি গাথনিতে লুকিয়ে আছে ফরাসি কারিগরদের শিল্পকলা। উত্তরের দুয়ারটি অবশিষ্ঠ না থাকলেও দক্ষিনের দুয়ারটি আজও দন্ডায়মান।

Gate

পাতাল বাড়ি – নামের সাথে সাথে স্বার্থক এই স্থাপত্য। এই বাড়িটির একদম নিচের তলা নদীর ভুগর্ভে অবস্থিত যা এটিকে চন্দননগরের একটি অনন্যতম স্থাপত্যের আখ্যা দেয়।

patal-bari

উপরোক্ত স্থাপত্যগুলি ছাড়াও আছে নন্দদুলাল মন্দির, নৃত্যগোপাল স্মৃতি মল্দির, বিশালক্ষি মন্দির, রাধানাথ শিকদার হিমালয়ান মিউজিয়াম ও রাসবিহারি রিসার্চ ইন্সটিটিউট যার টানে মানুষ আজও পারি দেয় চন্দননগর।

কি ভাবে যাবেন?
রেলপথ – হাওড়া স্টেশন থেকে বর্ধমান গামী প্রচুর ট্রেন আছে। বর্ধমান মেন লাইনের যে কোনো লোকাল ট্রেন বা ব্যান্ডেল লোকাল বা কোটোয়া লোকাল ধরে চন্দননগর স্টেশন।
সড়ক পথ- দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়ে ধরে কংসরির মোড়। সেখান থেকে ১৭ নম্বর রুট ধরে চন্দননগর। জিটি রোড ধরেও আপনি চন্দননদর যেতে পারেন।

তাহলে আর অপেক্ষা না করে ফরাসিদের আমেজ উপভোগ করতে বেরিয়ে পড়ুন চন্দননগরের উদ্দেশ্যে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...