করোনা পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। কারণ দীর্ঘ ৬মাসের এই লকডাউন ও নিউ-নরমাল পরিস্থিতিতে সব কিছু বন্ধ রয়েছে। কিন্তু পর্যটকরা এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া মাত্রই যাতে এক্কেবারে নতুন ভাবে তাদের এতো দিনের বন্দী দশা মুক্তির আনন্দ ষোলো আনা উপভোগ করতে পারে তার জন্য উত্তরবঙ্গ রীতিমতো সেজেগুজে তৈরী। আর সাথেই থাকছে এক নতুন চমক। সেই কথাই বলবো আজ।
উত্তরবঙ্গ বললেই যে ছবি সবার আগে ভেসে ওঠে তা হলো টয়ট্রেন। আর উত্তরবঙ্গের এই আকর্ষণ ও ঐতিহ্য ফিরছে এক্কেবারে নতুনভাবে। নতুন রূপ কারণ এখানে থাকছে না কোনো রেল লাইন। লাইন-বিহীন টয়ট্রেন চালু করা হচ্ছে বর্তমান পরিবেশ ও পর্যটকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে, আর তাই সেই টয়ট্রেনের চেহারাতেও এসেছে পরিবর্তন। কিছুদিনের মধ্যেই উত্তরবঙ্গের তিনটি পার্কে লাইন-বিহীন টয়ট্রেন চালু করা হবে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।
যদিও ২০১৯সালে শিলিগুড়ির কাছে বেঙ্গল সাফারি পার্কে প্রথম চালু হয় লাইন-বিহীন টয়ট্রেন। আর তখন থেকেই ঐতিহ্য আর স্মৃতির গন্ধে মেশা এই নতুন টয়ট্রেন বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর সেই সাফল্যের পর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বন দপ্তরের সহযোগীতায় প্রায় ১কোটি টাকা ব্যয়ে মালবাজার, বালুরঘাট, কোচবিহারের এন.এন.পার্ক-তিনটি পার্কে এই ট্রেন চালু করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রস্তুতি তুঙ্গে, সমস্ত কিছু পরিষ্কার করে জীবাণু মুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং সাজানো ও টয়ট্রেন বসানোর কাজ প্রায় সম্পূর্ণ, অপেক্ষা শুধু পরিস্থিতির স্বাভাবিক হওয়া ও সরকারের অনুমতি পাওয়ার।
এই নতুন চেহারার প্রতিটি ট্রেনে থাকবে তিনটি করে কামরা এবং প্রতিটি কামরায় ২৫-৩০জন যাত্রী বসতে পারবেন। সুরক্ষার জন্য থাকবে সিসিটিভি এবং অ্যালার্মের বন্দোবস্ত। কিন্তু করোনা আবহে সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে প্রথমে প্রতি কামরায় ১০-১৫জন যাত্রী নিয়েই পরিষেবা শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ ছিল টয়ট্রেন। কিন্তু তা সময়ের হাত ধরে নতুন রূপে এবং ঐতিহ্যকে যুগোপযোগী মোড়কে নিয়ে আবার ফিরছে তা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক।