আসতে চলেছে নতুন একটি বছর। চারদিকে সাজো সাজো রব। সব কিছুই সেজে উঠছে নতুন করে। নতুন বছরের ছোঁয়া লাগতে চলেছে রাজ্যের ট্যুরিস্ট লজগুলিতেও। পর্যটনমন্ত্রী তথা নিগমের চেয়ারম্যান গৌতম দেবের মতানুযায়ী, আগামী দিনে যে কোনো থ্রি'ষ্টার হোটেলকে টেক্কা দেবে নতুনভাবে তৈরী এই ট্যুরিস্ট লজগুলো। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লজগুলিতে তৈরী করা হচ্ছে আধুনিক জিম, স্যুইমিং পুল, বার, রেস্তোরাঁ, লাইব্রেরি। ঘরগুলিও হবে একেবারে নতুন মডেলে। তৈরী হবে নতুন ল্যান্ডস্কেপ। এইভাবেই লজগুলির সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগম।
একটা সময় ছিল, যখন মানুষ শুধুমাত্র থাকা-খাওয়া ভালো হলেই সন্তুষ্ট হতেন। কিন্তু দিনকাল পাল্টেছে। এখন পর্যটকদের অনেকেই জানতে চান, জিম, স্যুইমিং পুল বার-রেস্তোরাঁ আছে কি না। আমাদের রাজ্যে এসব ব্যবস্থা কোনো সরকারি লজেই নেই। অথচ দেশের অন্যান্য রাজ্য সরকারি লজ-এ স্যুইমিং পুল বা ফিটনেস সেন্টার অথবা বার-রেস্তোরাঁ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ট্যুরিস্ট লজগুলিতে যখন ভিনরাজ্য এমনকি ভিন দেশেরও পর্যটক টানতে পর্যটন নিগম উদ্যোগী হয়েছে, তখন প্রতিযোগিতার বাজারে পিছিয়ে পড়ছে এই রাজ্য। তাই এই সিদ্ধান্ত। নিগম সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে ২৫টি লজ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। ৫০টি ডাবল বেডরুম, ভিআইপি স্যুট, একই সময়ে ৩০ জন বসতে পারার মত বার, ১০০ আসন বিশিষ্ট কনফারেন্স রুম এবং ট্রেনার সহ জিমের পাশাপাশি লাইব্রেরি, আধুনিক কায়দায় কিচেন রুম লাগোয়া রেস্তোরাঁ থাকবে লজগুলিতে। সেই সঙ্গে লিফ্ট-এর সুবিধা, পার্কিং লট, নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, সিসিটিভি নজরদারি ও অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাও থাকবে নতুন তৈরী হওয়া লজগুলিতে। টেন্ডার ডেকে পেশাদার আর্কিটেক্ট সংস্থাকে নকশা তৈরির বরাত দেওয়া হচ্ছে। এই লজগুলিতে বাঙালি খাবারের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ ভারতীয় খাবার, চীন, কন্টিনেন্টাল প্রভৃতি সব ধরনের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ৪৪০ জন কর্মীকে কলকাতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তবে নতুন লজের পরিষেবার মান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লজের ভাড়াও বাড়বে কিন্তু তা কখনোই সাধারনের নাগাল ছাড়িয়ে যাবেনা। এইভাবে যদি রাজ্যের লজগুলি নতুন করে সেজে ওঠে, তাহলে অবশ্যই পর্যটকদেরও ভিড় বাড়বে এবং রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্র বিকশিত হবে বলাই যায়।