অত্যাধুনিক সফ্টওয়্যারের মাধ্যমেই চলছে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গোটা রাজ্যের তথ্য সংগ্রহ। জানা গিয়েছে যে, 'ক্রিটিক্যাল কেয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম'- এর মাধ্যমে সমগ্র রাজ্যের তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা তৈরি করছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। তবে কিভাবে কাজ হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজ থেকে জেলা স্তরের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটগুলিতে ও কেমনই বা কাজ হচ্ছে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটগুলিতে?
এই বিষয়ে জানা যায়, পরিষেবার দিক থেকে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির মধ্যে তালিকায় সর্বাগ্রে নাম রয়েছে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ-এর। রাজ্যের ১৫টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৫টি সিসিইউ-এর মধ্যে এক নম্বর জায়গা করে নিয়েছে এই হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগ। এরপরে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ তৃতীয় স্থানে। চতুর্থ স্থানে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ। এবং কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম স্থানে। তবে উক্ত বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দেয় যে, রাজ্যের এক নম্বর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পিজি’র যথেষ্ট ভালো কাজ করা সিসিইউ বিভাগের নাম এই তালিকায় নেই কেন। এই বিষয়ে স্বাস্থ্যভবনের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন যে, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি প্রতি মাস ধরে বিভিন্ন পরিষেবা ও পরিকাঠামোগত বিষয় যাচাই করা হয়। তারপরে এই রেঙ্কিং দেওয়া হয়ে থাকে।
এখনও পর্যন্ত পিজি এবং কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ পরিষেবাগত খুঁটিনাটি তথ্য না জানানোয় তাদের এই তালিকায় রাখা যায়নি। তবে এই বিষয়ে তথ্য এলে সেইমতো বিচার-বিশ্লেষণ করে আপডেট করা হবে। তবে এই দিক থেকে রাজ্যের ১৫টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ বাদে জেলা, মহকুমা ও গ্রামীণ হাসপাতালের (১টি) সিসিইউগুলির মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট। জেলা-মহকুমার সিসিইউগুলির মধ্যে প্রথম পাঁচে থাকা বাকি চারটি হাসপাতাল হল বোলপুর, হাওড়া, এম আর বাঙুর এবং হুগলি সিসিইউ। সিসিইউ থেকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর যেখানে রোগীদের রাখা হয়, সেই হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট বা এইচডিইউগুলির পরিষেবাগত মানের জায়গাতে প্রথম পাঁচটি এইচডিইউ হল বনগাঁ, ঘাটাল, জঙ্গিপুর, দিনহাটা এবং কাকদ্বীপ বলে জানা গিয়েছে। উক্ত ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, সিসিইউতে আসার পর রোগীকে কখন অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে? অথবা ‘আর্লি রেফারেল’ বা আসার পরপরই নাকি, ভালোমতো চিকিৎসা করে তারপর বা ‘লেট রেফারেল’? এছাড়া রোগী ভেন্টিলেশনের সুবিধা পাচ্ছেন কী? পেলে কী ধরনের ভেন্টিলেশনের সুবিধা, ইনভেসিভ বা শরীরে অভ্যন্তরে নল ঢুকিয়ে নাকি নন-ইনভেসিভ? এছাড়া সিসিইউ এবং এইচডিইউ-এর চিকিৎসা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্য কতটা আপডেট করা হচ্ছে ইত্যাদি বিষয়। তবে জানা গিয়েছে যে, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির মধ্যে আর জি কর, উত্তরবঙ্গ, বর্ধমান এবং এন আর এস—এই চারটি বড় হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনও রোগীকেই রেফার করা হয়নি ফেব্রুয়ারি মাসে। এক নম্বরে থাকা আর জি কর-এর আশঙ্কাজনক রোগীদের মধ্যে ৬১ শতাংশের বেশি রোগীকে রাখা হয়েছে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে। জানুয়ারি মাসে যে রেঙ্কিং করা হয়েছে তাতেও রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির সিসিইউগুলির মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে আর জি কর। দুই, তিন এবং চার নম্বর আসনে রয়েছে একই হাসপাতালগুলি। পঞ্চম স্থানে চলে আসে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ।