ঘটনাস্থল প্যারিসের বিমান বন্দর। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর একটি গবেষক দল একবার ফিরছেন ফ্রান্স থেকে। INSAT-4B উপগ্রহের পরীক্ষা সংক্রান্ত জরুরী কাজে প্যারিস গিয়েছিলেন তাঁরা। বিমান বন্দরে কাগজপত্র ও পাসপোর্ট চেকিং চলছে। সে সব মিটিয়ে তাঁরা যখন চলে আসছে হঠাৎ দেখলেন বিমানবন্দরের ওদেশের কয়েকজন অফিসার তাঁদের সঙ্গে আসছেন। ‘এসকর্ট’ করে নিয়ে যাচ্ছেন যেন তাঁদেরকে। বেশ অবাক হলেন গবেষকরা। তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ কোনও সমস্যা হয়েছে?’
অফিসাররা উত্তর দিলেন, ‘ তাঁদের ওপর এভাবেই এসকর্ট করে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ আছে’। একজন সিনিয়র অফিসার তাঁদের জানালেন বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তিনঘন্টা পর তাঁদের বিমান।
কিন্তু ভারতীয় বিজ্ঞানী দলটির বিমানের টিকিট ইকোনমি ক্লাসে। সে কথা জানাতে অফিসাররা অত্যন্ত ভদ্রতার সঙ্গে বললেন, ‘ ভারতের রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম এই টার্মিনালেই আসছেন। ইসরোর গবেষকরা সেই বিশেষ বিমানে ফিরবেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাতে বিজ্ঞানীদের বিশেষ খেয়াল রাখবেন তার অনুরোধ জানিয়েছেন কালাম’
ভারতের একাদশ তম রাষ্ট্রপতি আবুল পাকির জয়নুল-আবেদিন আব্দুল কালাম। তাঁর সারাজীবন জুড়েই এমন অজস্র গল্প ছড়িয়ে আছে। ‘সিম্পল লিভিং, হাই থিংকিং’- কথাটা শুধু কথার কথা হয়ে থাকেনি তাঁর কাছে। কাজেও প্রমাণ করেছেন বারবার।
কালাম তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি। ত্রিবান্দ্রামে কেরালা রাজভবনে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। তাঁকে জানানো হলে দুজন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে রাষ্ট্রপতি সূত্রে। তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দুজন কে। তাঁরা ত্রিবান্দ্রামেরই মানুষ। একজন একটা ছোট্ট হোটেল চালাতেন। অন্যজনের রাস্তার ধারে জুতো সারাইয়ের দোকান।
ভারতের মিসাইল ম্যান বলেছিলেন, ‘আকাশের দিকে তাকাও, আমরা কেউ একা নই’। বদলে দিয়েছিলেন একটা গোটা প্রজন্মের ভাবনাচিন্তা। নিজের স্বপ্ন পূরণে আগুনে ডানায় উড়তে হয়। এ পিজের প্রতিটা কথা, লড়াই প্রবাদ হয়ে গিয়েছে এদেশের পড়ুয়াদের কাছে। আজও তিনি অনুপ্রেরণা।