মন খারাপের বেলায় অনেকেই আছেন যাদের গান শুনতে ভালো লাগে বা শপিং-এ যেতে ভালো লাগে। মন খারাপের সময় মনের ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারলে মস্তিস্ক থেকে খুশির হরমোনের ক্ষরণ ঘটে। এন্ডোরফিন, অক্সিটোসিন, সেরোটোনিন এবং ডোপামিন এই চারটি হরমোনকে খুশির হরমোন বা ফিল গুড হরমোন বলা হয়ে থাকে। মন ভালো করার কাজ করলে এইসব হরমোনের ক্ষরণ হতে থাকে। আমরা সকলেই জানি মন খারাপের সময় চকোলেট খেলে মন ভালো হয়। তবে মন খারাপের সময় রান্না করলে যে মন ভালো হয় তা কি জানা আছে? চলুন আজ জেনে নিই এই বিষয়ে কিছু কথা।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় কুকিং থেরাপি। সাইকোলজিস্টরা জানান, রান্না করার সময় কোন মশলার পর কোন মশলা দিতে হবে তা আমাদের মনে রাখতে হয়। ফলে আমাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ ঘুরে যায় সেই রান্নার দিকে। খারাপ রান্না করতে কেউই চান না। তাই স্বাভাবিকভাবেই রান্নার দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়। তার কেল্লাফতে হয় তাতেই। মনের হাজার দুঃখ কষ্ট ভুলে তখন ফোড়ন কি দেবেন আর তার পর পেঁয়াজ ভাজবেন না ক্যাপসিকাম ভাজবেন সেই দিকে মন চলে যায়। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এইভাবে মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
এছাড়াও রান্নার সময় সবজির উজ্জ্বল রং এবং নানা মশলার সুগন্ধ মানুষের শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে উজ্জীবিত করে তুলতে সাহায্য করে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলেন, রান্না মানুষের ক্রিয়েটিভিটি বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই বাড়ির মা কাকিমা ঠাকুমাকে দেখা যায় এই মশলা সেই সবজি মিশিয়ে রান্নার উপর এক্সপেরিমেন্ট করতে। একবার বিফল হলে তো আরও জেদ চেপে যায়। এইভাবেই একদিন নতুন একটি পদ তারা তৈরী করেই ছাড়ে। বিশেষজ্ঞরা এই জিনিসটিই তুলে ধরতে চেয়েছেন সকলের সামনে। বলা হয়, বেকিং যারা করেন তাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বেশি পরিমানে থাকে। কারণ, বেকিংয়ের সময় ডিম, ময়দাসহ সমস্ত উপকরণ একদম সঠিক মাপে দিতে হয়। মাপের মান বজায় রাখতে রাখতেও নিজেদের জীবনকেও সেইভাবে শৃঙ্খলায় বেঁধে ফেলেন তারা।
রান্না করতে অনেকেরই ভালো লাগে। যাদের খাওয়াতে ভালো লাগে স্বাভাবিকভাবে তাদের রান্না করতেও ভালো লাগে। অন্যের জন্য রান্না করা আর সেই রান্না খাইয়ে প্রশংসা পাওয়া যে কতটা সুখের তা যারা নিয়মিত রান্না করেন তারাই শুধু বোঝেন। তাই যদি কখনো মন খুব খারাপ হয় তাহলে আলু, পেঁয়াজ সাথে নিয়ে চলে যান রান্নাঘরে আর সাথে ইন্টারনেট তো আছেই। ট্রাই করে ফেলুন কোনো ইন্টারন্যাশনাল পদ। মনও খুশ আর বাড়ির লোকও খুশ।