একজন মানুষের মুখের দিকে তাকালে তার চোখ, নাক, ঠোঁট সবটাই দৃষ্টিগোচর হয় বিপরীত দিকে থাকা মানুষটির। সেই ঠোঁটকে সবসময় রঙিন করে রাখতেই পছন্দ করেন মহিলারা। প্রেমিক মনে দাগ কাটতে চোখের কারসাজির সাথে কাজে আসে এই ঠোঁট। সেই ঠোঁটকে সুন্দর করে রাখতে কত চেষ্টাই না করে সকলে। শুধু নারী কেন পুরুষরাও এই ব্যাপারে পিছনে যান না। তারাও নারীদের মতোই সমানভাবে খেয়াল রাখেন তাদের ওষ্ঠ যুগলের। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় এই ওষ্ঠ যুগলের গায়ে লেগেছে কলঙ্কের দাগ! অর্থাৎ ঠোঁটে এসে হাজির হয়েছে কালো ছোপ। কি করণীয় তখন সেটাই আজ জানাব আপনাকে।
সাধারণ ধূমপানের ফলে ঠোঁটে কালো দাগের সৃষ্টি হয়ে থাকে। সেই দাগ আসলে পুড়ে যাওয়ার দাগ। এছাড়াও রোদে বেরোনোর সময় ঠোঁটে বেশি এসপিএফ যুক্ত লিপবাম বা লিপস্টিক না লাগানোর ফলেও এই সমস্যা হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা লিভারের সমস্যা থেকে মুখমন্ডলের নানা জায়গায় কালো ছোপ হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ঠোঁটের কালো দাগও লিভারের সমস্যার ফল হতে পারে। কিন্তু এই দাগ দূর করার উপায় কি?
এই দাগ দূর করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। বাজারে প্রচুর ট্যান রিমুভিং প্যাক পাওয়া যায়। সেই প্যাক ট্যানের দাগ তুলতে খুব ভালো কাজ দেয়। এছাড়াও বেশ কিছু পদ্ধতি আছে যেগুলি এই দাগ তুলতে সাহায্য করতে পারে তা হল-
১) প্রথমেই ধূমপানের অভ্যেস ত্যাগ করতে হবে। ধূমপানের ফলে ঠোঁটের চামড়া পুড়ে যায় সেই দাগ তুলতে বেশ কালঘাম ছোটাতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে পোড়ার উপর আবার পুড়তে থাকলে সেই জায়গায় পরবর্তীকালে ঘা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২) ঠোঁট ফেটে সেখানে মরা কোষ জন্মালে সেই ঠোঁট তখন কালো দেখায়। সেই ক্ষেত্রে ঠোঁটের কালো দাগ তোলার জন্য আপনি কাজে লাগাতে পারেন আপনার টুথব্রাশ। দাঁত মাজার সময় সেই ব্রাশ দিয়েই ঠোঁটের উপরে হালকা করে ঘষে নিন। এতে মরা কোষ দূরীভূত হয়ে ঠোঁটের ঔজ্বল্য আবার ফিরে আসবে।
৩) আগে যেমনটা বলা হয়েছিল, রোদে বেরোনোর সময় বেশি এসপিএফ যুক্ত লিপবাম লাগান। যাতে সূর্যের তাপ সোজাসুজি ঠোঁটকে আঘাত না করতে পারে। বা বাইরে বেরোনোর আগে আপনি ত্বকে যে সানস্ক্রিন লাগান সেখান থেকেই একটুখানি নিয়ে ঠোঁটের উপরে লাগিয়ে নিন।
৪) লেবুর রস এবং মধুর মিশ্রণ ঠোঁটে লাগান। প্রাকৃতিক প্যাকের কাজ করবে। ঠোঁট থেকে কালো দাগও যেমন গায়েব হয়ে যাবে সেরকমই ঠোঁট আরও নরম হয়ে উঠবে।
৫) ঠোঁটের শুষ্ক চামড়া তুলতে স্ক্রাবারের জুড়ি মেলা ভার। আর বাজার চলতি লিপি স্ক্রাবারের যেমন বেশি দাম তেমনই সেগুলি নানা ক্ষতিকর রাসায়নিকে ভর্তি। তার থেকে ঠোঁট জল দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে এক চিমটি চিনি নিয়ে ঠোঁটের উপরে ঘষতে থাকুন। চিনি গলে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৬) এছাড়াও কালো ছোপ তুলতে আলুর রস খুব ভালো কাজ দেয়। সকলের বাড়িতেই আলু থাকে। সেখান থেকে একটু আলু নিয়ে তা ঠোঁটে ঘষে লাগান। আলুর রস শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে নিলেই উজ্জ্বল ঠোঁট পাওয়া সম্ভব হবে।
এইসব টোটকা আগেকার দিনের টোটকা। আগেকার দিনে যখন বাজারে প্রসাধনী দ্রব্য বেশি পাওয়া যেত না তখন ঠাকুমা-দিদিমারা এই পদ্ধতিতেই রূপচর্চা করতেন। সেই পদ্ধতিই আজ তুলে ধরা হলো আপনাদের কাছে। এই পদ্ধতিগুলি সব যদি ফেল হয়ে যায় তাহলে একবার ত্বকের ডাক্তার দেখিয়ে দেবেন। কোনো ভাইরাল বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের থেকেও এই সমস্যা তৈরী হতে পারে।