এতদিন পর্যন্ত ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’ তৈরি হত আমদানি করা তুলো কিংবা উদ্ভিজ সেলুলোজ দিয়ে। এবার স্যানিটারি ন্যাপকিন উৎপাদনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে চলেছে ’পাট’। পাটের তৈরি নতুন ধরনের স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রস্তুত হবে দেশজ পাট দিয়েই। অন্যান্য স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতো কোনো রাসায়নিক পদার্থের ছোঁয়া এতে থাকবে না বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ‘ইণ্ডিয়ান জুট ইন্ডাস্ট্রিজ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন’ (ইজিরা) এবং খড়গপুর আইআইটি-র এই গবেষণা এবং ‘আবিষ্কার’ ডুবতে বসা পাটশিল্পকে নতুন আশার আলো দেখাবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, কীভাবে এই ধরনের স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রস্তুত করা সম্ভব, তা নিয়ে গ্রামে-গ্রামে মহিলাদের তাঁরা প্রশিক্ষণ দিতে চান। তাঁদের বিশ্বাস, এতে গ্রাম্য মহিলাদের অর্থ উপার্জনের একটা নতুন দিকও যেমন খুলে যেতে পারে, পাশাপাশি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও সম্ভব হবে । সার্ভিকাল ক্যানসার-সহ একাধিক রোগ প্রতিহত করতে সাহায্য করবে এই স্যানিটারি ন্যাপকিন। কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান জুট ইন্ডাস্ট্রিজ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের’ (আইজেআইআরএ) বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্বল্প মূল্যের এই স্বাস্থ্যকর স্যানিটারি ন্যাপকিন দ্রুতই পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে গ্রাম-গ্রামান্তরের মহিলাদের কাছে।
পাটজাত এই ধরনের স্যানিটারি ন্যাপকিন দ্রুত বাজারে নিয়ে আসার সাথে সাথে একে কেন্দ্র করে একটা বিরাট পরিকল্পনার কথাও ভাবছে আইজেআইআরএ-র বিজ্ঞানীরা। খড়গপুর আইআইটি-র গবেষকরা সর্বপ্রথম এই ন্যাপকিন আবিষ্কার করেন। পরে সস্তায় কীভাবে পাটের তৈরি ন্যাপকিন বানানো সম্ভব তা নিয়ে কলকাতাতেই ইণ্ডিয়ান জুট ইন্ডাস্ট্রিজ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন (ইজিরা) দীর্ঘ গবেষণা চালায়। এই সংস্থার উদ্যোগেই মুর্শিদাবাদের টুঙ্গি কৃষি সমবায় সমিতির প্রায় ১০০ জন মহিলাকে ন্যাপকিন তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
‘সাথী’ নামক পাটের তৈরি এক ধরনের ন্যাপকিনও এনেছিল ইজিরা। পাটের স্যানিটারি ন্যাপকিনকে পরীক্ষামূলক ভাবে বাজারে নিয়ে আসার সময়ে প্রথমে বাছা হয় চটকলের মহিলা কর্মীদের। বিভিন্ন চটকলে শ্রমিকদের মধ্যেও ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়।