একটানা ৩২ বছর। গলি থেকে রাজপথ সর্বত্র। গতি বেড়েছে চাকার। জ্যাম-যানজট-ধাক্কাধাক্কি, তবু একরোখা তিনি। একটা বারের জন্যও হর্ন বাজাননি তিনি। কৈলাস মোহতা। পেশায় ব্যবসায়ী। ভিড়েভরা ঘিঞ্জি বড়বাজারে তাঁর নিত্য যাতায়াত। সেখানেই নিজস্ব ব্যবসা। উত্তর আর মধ্য কলকাতার বিখ্যাত যানজটে ভোগান্তি এড়ানো দায়।
তবু নিজের সংকল্পে তিনি অটল, ‘হর্ন বাজবেন না’। স্কুটার তাঁর বাহন। বাহনে প্ল্যাকর্ড, “বিনা কারণে হর্ন বাজাবেন না”। বাংলা- হিন্দি আর ইংরেজি তিন ভাষাতেই লিখেছেন এই সচেতনতা বাক্য। শহরবাসীকে শব্দদূষণ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে এ তাঁর নিজস্ব প্রয়াস। গত চারবছর ধরে এভাবেই চলছে তাঁর জীবন। তাঁর এই ছোট্ট একরোখা বাহন হয়ে উঠেছে সচেতনতা যান।
নিজেকে বলেন নীরব যোদ্ধা। তাঁর মতে ট্র্যাফিক নিয়ম মেনে চললেই যানজট কমানো যায়। নাগরিকরা যত সচেতন ও দায়িত্বশীল হবে তত অহেতুক হর্নের ব্যবহার কমবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসে কাটিয়েছেন একসময়। চীনেও গিয়েছেন চীনের মতো জনবহুল দেশেও অপ্রয়োজনে হর্নের ব্যবহার হয় না। দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, “ওরা যদি পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না!”
এমন ভাবনার পাশে দাঁড়িয়েছিল পরিবার। বহু মানুষ প্রশংসা করেছেন শব্দ দৈত্যকে কাবু করতে তাঁর উদ্যোগের। কৈলাস মোহতার মতে হর্নের তীব্র ব্যবহার প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে। স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। স্ট্রেস বাড়ে। হৃদযন্ত্রও বিপদমুক্ত থাকে না। এসবের বিরুদ্ধে তাঁর একটাই মন্ত্র, “ডোন্ড হঙ্ক, জাস্ট ব্রেক”।