আসিয়াও আসিল না। মাস দেড়েক আগেই দীঘা থেকে বয়ে এসেছিল সুসংবাদ, একসাথে ৮ টন ইলিশ উঠে এসেছিল একেবারে। এবার গভীর জলে বাঁকবদল করে বাংলাদেশের পথ ধরলো বাঙালির ‘স্বাদে’র এই রূপোলি শস্য। এমন আচমকা পথ পরিবর্তনের কারণ হিসেবে কয়েকটি তথ্য উঠে আসছে, হুগলী নদীর মুখে মাছ ধরার জাল ও পলি জমে যাওয়ার ফলে নদীর নাব্যতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ফলে পথ পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে চলে গেছে ইলিশের ঝাঁক।
এ কারণেই এ পার বাংলার নদীগুলিতে ইলিশের দেখা প্রায় পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। বাজারেও এই মূহুর্তে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। সেন্ট্রাল ফিনল্যান্ড ফিশারিস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান উৎপল ভৌমিকের মন্তব্যে, ইলিশ সাধারণত তিনটি পথ ধরে। হুগলী, বাংলাদেশের মেঘনা নদী ও মায়ানমারের ইরাবতী। সাম্প্রতিক কালে হুগলীতে যেভাবে বেলাগাম ইলিশ ধরা হয়েছে এবং নদীতে যে পরিমাণ পলি জমেছে, তা দেখে আর হুগলীমুখী হচ্ছে না তারা, বরং বেছে নিচ্ছে বাংলাদেশের মেঘনা নদী পথ।
২০০২-০৩ সালে ৬২,৬০০ টন ইলিশ ধরা পড়েছিল হুগলী নদী থেকে। ২০১৭-১৮ সালে তা নেমে দাঁড়ায় ২৭,৫৩৯ টনে। এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, প্রায় ৫৬ শতাংশ কমে গিয়েছে ইলিশের যোগান। আর ঠিক এই একই সময়ে বাংলাদেশে লক্ষণীয় হারে ইলিশ ধরা পড়ার দৃশ্য চোখে পড়েছে। ২০০২-০৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ১,৯৯,০৩২ টন, ২০১৭-১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে, ৫,১৭০০০ টনে। অর্থাৎ সেখানে বৃদ্ধি বেড়েছে প্রায় ১৬০ শতাংশ।
বাজারের বিপুল চাহিদা মেটানোর জন্য মাত্রাহীন ইলিশ ধরার ফলে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ৭৫ শতাংশ ইলিশ ধরা পড়ে বাংলাদেশে, ১৫ শতাংশ ধরা পড়ে মায়ানমারে এবং মাত্র ৫ শতাংশ ধরা পড়ে ভারতে।