“কে বলে তোমায় অস্পৃশ্য অশুচি
শুচিতা ফিরেছে সদা তোমারই পিছনে
তুমি আছো গৃহবাসে তাই আছে রুচি
নইলে মানুষ বুঝি ফিরে যেত বনে”
সেপটিক ট্যাঙ্ক অথবা গাটারে নেমে ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে, প্রতি ৫ দিনে ১ জন করে সাফাই কর্মীর মৃত্যু হয় ভারতবর্ষে, আর বার্ষিক হারে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩,০০০ এ। এমন তথ্যই উঠে আসছে। মৃত্যুই শুধু নয়, বিবিধ রোগ, চোট-আঘাতেরও সম্মুখীন হতে হয় তাঁদের। আর সমাজের অবহেলিত শ্রেণী অর্থাৎ দলিত শ্রেণির মানুষেরাই এ কাজ করে আসছেন পরম্পরায় এবং তারাই করবে -এই অলিখিত নিয়মের অন্বেষণে বেরোলে কোনও কূল কিনারা মেলা দুষ্কর। এ অবস্থায়, এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজকে সহজ করে তুলতে অদ্ভুত এক রোবট নির্মাণ করে ফেলেছেন আইআইটি মাদ্রাজের ‘নন ডেসট্রাকটিভ ইভ্যালুয়েশন ডিভিশন’-এর একদল ছাত্র।
‘SEPoy’ নামক এই রোবটটি প্রতিবছর ২৩,০০০ সাফাইকর্মীর জীবন বাঁচাতে সক্ষম, এমনটাই বলছেন আইআইটির ছাত্ররা। হাইড্রেন, ম্যানহোল অথবা সেপটিক ট্যাঙ্কে সাফাই-এর কাজ করতে গিয়ে দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত গ্যাসে বহু সাফাইকর্মীই প্রাণ হারান। তাঁদেরকে রক্ষা করতেই এমন রোবট বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইআইটির এই ছাত্ররা। সবকিছু ঠিক থাকলে ২-১ বছরের মধ্যেই বাজারে এসে যাবে এই জীবন রক্ষাকারী রোবট ‘SEPoy’।
ডঃ প্রভু রাজাগোপালের মস্তিস্কপ্রসূত এই ভাবনা আগামী দিনে নিঃসন্দেহে দেশবাসীকে নতুন দিশা দেখাতে চলেছে। মূলত বায়ূচাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে রোবটটিকে। প্রায় ৫০ কেজি ওজন বহন করতে পারবে SEPoy । রোবটটির ভেতর একটি ক্যামেরা ইন্সটল করা থাকবে, যা নিয়ন্ত্রণ করবে কন্ট্রোল ইউনিট। আর এই ক্যামেরাই দেখিয়ে দেবে নর্দমার লাইনের হাল ও সমুদ্র সৈকতবর্তী আবর্জনার নির্দিষ্ট স্থানগুলি।
প্রসঙ্গত, উচ্চ গতি সম্পন্ন কাটার থাকছে রোবটটিতে, যার ফলে ছোট বড় আবর্জনা কাটার কাজ অচিরেই সহজ হয়ে আসবে। আবর্জনা সংগ্রহ করবে ৩৬০ ডিগ্রি ঘূর্ণায়মান হুইল।
রোবটটির আনুমানিক মূল্য কত হবে তা এখনও স্থির না হলেও, জানা যাচ্ছে প্রায় ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে SEPoy এর বাজার মূল্য।
বিষয়টি নিয়ে ন্যাশনাল কমিশন ফর সাফাইকর্মচারীর সদস্যদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করছেন তাঁরা। শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতির পাশাপাশি এ সম্পর্কে গণ অনুমোদন পেতে, দেশ বিদেশের বিভিন্ন জেলা গুলিতে প্রচার অভিযান চালানো হবে বলেও জানা যাচ্ছে।