আজ বলবো বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের এমন এক বাড়ির কথা যার সাথে জড়িয়ে আছে ইতিহাস। আজও সেই বাড়ি পর্যটকমহলে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু ঠিক কি কারণে? সেই কথাই বলি।
এই শাহজাদপুরেই দেখা মিলবে প্রশস্ত বাগান ঘেরা হলুদ রঙের বেশ জেল্লাদার এক দোতলা বাড়ির। যা কিন্তু বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। কারণ এর সাথে একে ইতিহাস তার উপর কলকাতার এক নোবেল বিজয়ীর সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। এবার বলি সেই কথা। এই বাড়িটি এক সময় ছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের। স্থানীয়দের কাছে এর পরিচয় ‘রবীন্দ্রনাথের কাছারি বাড়ি’ হিসেবে।
বহু ইতিহাসের সাক্ষী ছিল এই বাড়ি, কারণ প্রথমে এই বাড়ি ছিল নীলকর সাহেবদের অধীন। কিন্তু ১৮৪০সালে জোড়াসাঁকোর প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর নিলামে এই বাড়িটি কিনে নিলে বাড়িটি রূপ বদলে হয়ে গেলো বিখ্যাত ‘ঠাকুর পরিবারের কাছারি এস্টেট’। কিন্তু এই বাড়ি ও জায়গার মাহাত্ম বৃদ্ধি পায় উনবিংশ শতকের শেষের দিকে রবীন্দ্রনাথের আগমনে।
তার শিল্পী সত্ত্বা এই জায়গার মুগ্ধতা উপলব্ধিতে কাল বিলম্ব করেনি। জমিদারি সামলানোর পাশাপাশি কবিতা, গল্প লেখা ও গান বাঁধলেন তিনি। লেখায় এই জায়গার মাহাত্ম ও প্রভাব প্রকাশ পেয়েছে। ‘ছিন্নপত্রাবলী’র বেশ কিছু লেখায় এই মুগ্ধতা ধরা পড়েছে। এখনো এইখানে সযত্নে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি, ছবি, ব্যবহৃত জিনিসপত্রসহ দুটো বোট এবং পালকি। সেই ইতিহাসের সাথে সাক্ষাৎ করতেই প্রতি বছর অনেকে হাজির হন এই বাড়িতে। ঠিক পাশেই আছে কাছারি বাড়ির পুরোনো অংশ, যদিও তাতে মলিনতার ছাপ সুস্পষ্ট। এখন দেখার প্রশাসনিক পক্ষ থেকে এই বাড়ি কতটা সংরক্ষণ করা যায়। তাহলে ফেলে আসা সময়কে আরো একবার ছোয়াঁ যাবে।