'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে প্রায় ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অন্তর্ভুক্ত হলেও রাজ্যে এই প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে বাংলার বাড়ি। প্রকল্পের আওতাভুক্ত বাড়িগুলিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নির্দিষ্ট লোগো লাগাতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে, কিন্তু রাজ্য যেহেতু কোথাও ৪০ শতাংশ কোথাও ৫০ শতাংশ টাকা খরচ করছে, তাই ওই লোগো ব্যবহারে আপত্তি তুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত আর্থিক বছরে এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার বাড়ি তৈরী হয়েছে। সেই হিসেবে চলতি আর্থিক বছরে সংখ্যাটা বাড়ছে প্রায় আড়াই লক্ষ। বাড়িগুলি তৈরী করবে রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে জনপ্রতি এই প্রকল্প বাবদ পাবেন ২০ লক্ষ টাকা এবং অন্যান্য জেলার গরিব মানুষেরা পাবেন ৩০ লক্ষ টাকা। এই টাকার ৬০ শতাংশ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাকি ৪০ শতাংশ দেবে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, রাজ্যজুড়ে প্রকল্পের কাজ চললেও আটটি জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেগুলি হল- হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। গত আর্থিক বছরে রাজ্য এই প্রকল্পে যেমন কাজ করেছিল, সেই কাজে খুশি হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক বর্তমান আর্থিক বছরে বরাদ্দের পরিমান আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে সুবিধাপ্রাপকের সংখ্যাও প্রায় আড়াই লক্ষ বেড়েছে।
বলাই বাহুল্য, বাড়িগুলি তৈরী করবে রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। বাড়িগুলি ২৫ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে তৈরী করতে হবে। তার মধ্যে একটি রান্নাঘর, একটি বারান্দা এবং একটি শৌচাগার থাকবে। এর মধ্যে শৌচাগারটি তৈরী হবে 'মিশন নির্মল বাংলা' প্রকল্পের টাকায়। সম্প্রতি নবান্ন'র তরফে জেলাশাসকদের যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নাবান্নর তরফে আরো জানা গেছে, উক্ত প্রকল্পটির বাড়তি সুবিধা হল, কোনও ব্যক্তি চাইলে নিজের টাকা খরচ করে বাড়িটিকে আরও সুন্দর ও বড় করতে পারবেন। গ্রামবাংলায় এই প্রকল্পের মত রাজ্যের ১২৫টি পুরসভাতেও এই ধরণের বাড়ি বানানোর প্রকল্প চলছে। সম্প্রতি নজরুল মঞ্চে দলীয় কাউন্সিলরদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শহরাঞ্চলেও প্রায় আট লক্ষ মানুষকে এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরী করে দেওয়া হবে। স্বচ্ছতার প্রশ্নে কোনওভাবেই যেন আপস না করা হয়, সেই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিস্ট্রিক্ট প্ল্যানিং কমিটি, জেলা পরিষদ এবং জেলা শাসকের দফতরকে। প্রতি ১৫ দিন অন্তর প্রকল্পের কাজ পর্যালোচনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।