অপরাধ করলে তার শাস্তি মেলে -এটাই স্বাভাবিক।তবে তা সুস্থ জ্ঞানে মানুষের ক্ষেত্রেই প্রকটভাবে কার্যকরী । তবে কোনো গাছ যে অপরাধ করে সাজা পেতে পারে তা শুনেছেন কখনো ? নিশ্চই না। আপাত দৃষ্টিতে তা সম্ভব না হলেও আজও তার নিদর্শন মেলে -যেখানে এক গাছ , যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ! প্রায় ১২২ বছর ধরে সে কারারুদ্ধ। মৌখিক নয় বিষয়টি ...রীতিমতো শেকলবন্দি। আজ সেই কথাই জানাবো।
সময়টা ১৮৯৮। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারত তখন অবিভক্ত । সেই সময় জেমস স্কুইড নামের এক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা এক বিচিত্র ঘটনা ঘটান। তিনি এক বট গাছকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। কিন্তু কি এমন ঘটেছিলো , যে এই অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি ? স্কুইড এক রাতের বেলায় মদ্যপ হয়ে ফিরছিলেন বাড়ি। রাস্তা দিয়ে আসতে আসতে তিনিও হঠাৎ দেখেন একটি বট গাছ ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছে। গাছটিকে তিনি বহুবার বারণ করার পর গাছ নাকি তার কথা অমান্য করে.. .সে এগিয়ে আসে । আর তার কথা অমান্য করার শাস্তি হিসেবেই তাকে এই যাবজ্জীবন দণ্ড দেন এই সাহেব। আর সেই সাজা গাছটি আজও ভুগছে। গাছটির গায়ে লেখা ' I AM UNDER ARREST ' ।
দেশ ভাগের পর সেই গাছ এখন পাকিস্তানের আওতায়। এখনো শেকলবন্দী অবস্থায় পাকিস্তানের লন্ডি কোটাল সেনানিবাসে আছে সে। যদিও মদ্যপ স্কুইড নেশার ঘরে কি দেখেছে তার কথার গুরুত্ব তখন কেউ না দিলেও সাহেবের কথা অমান্য কেউ করতে পারে নি। তাই গাছটিরও রেহাই মেলে নি। গাছটিকে শেকল দেওয়ার পর স্কুইড স্থানীয় লোকদের হুমকিও দেন যাতে কেউ তা মুক্ত না করে, তাহলে সেও যাবজ্জীবন শাস্তি পাবে । যাই হোক আজও শিকল বাঁধা অবস্থায় গাছটি রয়ে গেছে , আর এক সাহেবের অদ্ভুত খামখেয়ালির নির্দর্শন বয়ে চলেছে। তবে এর অন্য ব্যাখ্যাও করে বিদেশী সংবাদ মাধ্যম গুলো। সেখানে বলা হয়, এই অযৌক্তিক কাজটির আবার এক গভীর অন্তর্নিহিত অর্থ আছে। ব্রিটিশ অফিসার জেমস স্কুইড এই কাজটি আদিবাসীদের হুমকি দেওয়ার জন্যই করেছিলেন। ফ্রন্টিয়ার ক্রাইমস রেগুলেশন আইনটি কার্যকর করার জন্য এই মাধ্যমটি নেন তিনি এবং মূলত উপজাতিদের বোঝান যে তারা যদি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধাচরণ করার সাহস করে তবে তাদেরও একই ধরণের শাস্তি দেওয়া হবে। তবে উদ্দেশ্য যাই থাক আজও এই গাছ মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।