ফাঁদ, বিষ, স্প্রে দিয়ে এতদিন পর্যন্ত যাদের তাড়াতে নাজেহাল হতে হত, এখন তারাই রক্ষকের ভূমিকায়। তাঞ্জানিয়ার মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছে মেঠো ইঁদুরের দল। ১৯৯৭ সাল থেকে সেখানকার একটি এনজিও ইঁদুরদের প্রশিক্ষণের কাজ করছে। ল্যান্ড মাইন এবং টিউবারকুলেসিস এই দুই চিহ্নিতকরণের কাজ করছে আফ্রিকান জায়ান্ট পোচড র্যাট।
এই বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইঁদুরদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হিরোর্যাট’। এনজিও-র সমীক্ষা অনুযায়ী আফ্রিকার সাব-সাহারার দেশগুলিতে বছরে প্রায় ৪ হাজার মানুষ ল্যান্ড মাইনে মারা যান। হিরোর্যা মানুষের থেকে অনেক দ্রুত ল্যান্ডমাইনের সূত্র খুঁজে বের করে করতে সক্ষম। এই সব ইঁদুর আকারে বড় হলেও ওজনে এতই হাল্কা যে তাদের স্পর্শে বিস্ফোরণ এর কোনও সুযোগ নেই। মাটিতে পেতে রাখা ল্যান্ড মাইন- এর ওপর দিয়ে তারা দিব্যি দৌড়তে পারে। তাদের গন্ধ চেনার জন্য টিএনটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারা যখন মাটি থেকে অন্যরকম গন্ধ পায় তখন সেখানে আঁচড় কাটতে শুরু করে। এভাবে ১০০,০০০টি ল্যান্ডমাইন চিহ্নিত করেছে এখনও পর্যন্ত।
টিউবারকুলেসিস অর্থাৎ টিবি পরীক্ষাএও তারা মানুষের হেকে বেশি পারদর্শী। ল্যাবরেটারিতে টিবির টেস্ট করতে একজন পরীক্ষকের ৪ দিন লাগে। কিন্তু হিরোর্যাট ১০০ স্যাম্পেল টেস্ট ২০ মিনিটে করে দেয়। এভাবে তারা প্রায় ১১,০০০ টিউবারকুলেসিস টেস্ট করেছে।
আফ্রিকার এই অংশে টিউবারকুলেসিসের প্রকোপ মারাত্মক বেশি। হাসপাতালগুলোতেও অর্ধেকের বেশি টিবি আক্রান্ত রোগী। ২০১৫ সালে আফ্রিকায় ৭৫০,০০০ মানুষ মারা যান টিউবারকুলেসিসে ভুগে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি প্রথমে ১১১ টি ইঁদুরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। তারা সবাই তাদের কাজে এখনও পর্যন্ত সফল। ন’মাস ধরে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তার পরই তারা ‘ফিল্ড’-এ নামে হাতেকলমে কাজের জন্য। তাদের ফিল্ডের কাজ শেষ হয়ে গেলে একটা সময় পর মানুষের মতোই অবসর নেয় তারা। উপভোগ করে সেই জীবন।
সম্প্রতি হিরোর্যাটদের কার্যকলাপের একটি ভিডিও প্রকাশ করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি।