পুজোর আর বাকি মাত্র ১৪ দিন। ইতিমধ্যেই শরতাকাশ দখল করে নিচ্ছে সাদা মেঘের শামিয়ানা। মা এবার ঘোড়ায় আসছেন। পুজোয় বৃষ্টি হবে কি না, তা এখনও সম্পূর্ণ পরিষ্কার নয়। তবে এরই মধ্যে অফসাইডের ফ্ল্যাগ তুলে দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে মোটের উপর তাঁরা জানিয়ে দিচ্ছেন পুজোয় ব্যাঘাত ঘটাতে চলেছে বৃষ্টি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে চলা নিম্নচাপ অনেকটা এমন সংবাদই বয়ে নিয়ে আসছে।
শেষ কয়েকদিন বৃষ্টি না হওয়ায় রোদ পেয়ে জোরকদমে রঙের কাজ শুরু করে দিয়েছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা, প্যান্ডেলগুলোতেও চলছে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতিপর্ব। লোকারণ্যে উপচে পড়ছে গড়িয়াহাট-হাতিবাগান-এসপ্ল্যানেড চত্বর। আবহাওয়াবিদরা পরিষ্কার করে দিয়েছেন আগামী তিন দিন বৃষ্টির দেখা নেই। বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া নিম্নচাপের ফলে ২১ তারিখ অর্থাৎ সোমবার থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।। তুলনায় ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বুধ ও বৃহস্পতিবার বেশী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
জুন-জুলাইয়ে অনেকটা কম বৃষ্টি হলেও অগাস্টে অতিবৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। সেপ্টেম্বরেও সেই প্রবণতা থেকে যাচ্ছে। পুরোপুরি বিদায় নেওয়ার আগে যে এখনও বৃষ্টি বাকি রয়েছে বর্ষার ঝুলিতে, সেই চিত্রটিও ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বৃহস্পতিবার মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ২৭শে সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর, এই সময়ে স্বাভাবিকের থেকে বেশী বৃষ্টিপাত হবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। আগামী সপ্তাহেও তাই। ফলে গোটা পুজোতেই বৃষ্টির ভ্রুকুটির দিকে মুখ চেয়ে থাকতে হতে পারে কলকাতাবাসীকে।
সাধারণত ৮ই অক্টোবরের মধ্যে কলকাতা থেকে বর্ষা পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলে। তবে গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, পুরোপুরি বিদায় নিতে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে বর্ষার। চলতি মরসুমের শুরুতে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় একাধিক নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগর উপকূলে। পরিসংখ্যান বলছে ১৪টি। প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘এল নিনো’র প্রভাব কাটাতেই লাইন লেগেছে নিম্নচাপের। যত বেশী নিম্নচাপ, তত লম্বা বর্ষার আয়ু। আগামী নিম্নচাপের পিছনেও যে কোনো নিম্নচাপ থাকছে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
মৌসম ভবন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নাগাদ পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপের বলয় তৈরী হতে পারে। অনুমান বলছে ঘনীভূত নিম্নচাপটি অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে সরলেও তাতে রেহাই নেই বাংলার। সংবাদের জেরে উৎসবের মুখে স্বভাবতই চিন্তায় ছোটো বিক্রেতারা।