বিদায় হিম্মত মাই

' স্পেস' শব্দটার চিরকালই একটা অন্য তাৎপর্য ছিল তাঁর কাছে। লড়াইটাও 'স্পেস' নিয়েও। এই সমাজ ঠিক কতটা 'স্পেস' দেয় একজন নারীকে? এই সমাজ একটা 'স্পেস' দেয় একজন 'পারফর্মার'কে? এই সমাজ কতটা মানতে পারে নারীর কর্তৃত্বকে?প্রশ্নগুলো সহজ। উত্তর-ও সোজা।

কিন্তু তিনি উত্তর খুঁজতেন। স্পেসের প্রয়োজনটাও সেই কারণেই। নিজের মতো করে মেয়েদের নাটকের স্পেস তৈরিও করেছিলেন। কলকাতায় বিদেশের মতো বক্স থিয়েটার গড়ে। নটি বিনোদিনী, কেয়া চক্রবর্তীদের মতো অগ্রজদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন এভাবেই। অথচ তিনি মোটেই থিয়েটারে আসতে চাননি। জীবন শুরু হয়েছিল নৃত্য শিল্পী হিসেবে। ভরতনাট্যমের তালিম নিয়েছিলেন। তবু অমোঘ নিয়তির মতো থিয়েটার জড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর জীবনে।

ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়, ওরফে ঊষা গাঙ্গুলি। বৃহস্পতিবার ভোরে কলকাতায় নিজের বাসভবনে চলে গেলেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সদ্য ছোট ভাইয়ের মৃত্যুতে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঊষা গাঙ্গুলির জন্ম রাজস্থানের যোধপুরে। মাতৃভাষা হিন্দি। কলকাতায় হিন্দি নাট্য চর্চার অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। থিয়েটারে মেয়েদের কথা বলতেন। দক্ষিণ এশিয়ায় নারীবাদী থিয়েটার চর্চার অন্যতম নাম । ১৯৭৬ এ শুরু করেন নাটকের দল 'রঙ্গকর্মী'। একাধারে অভিনেতা, নির্দেশক আবার অন্যদিকে মহিলাদের অধিকার আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিলেন বিভিন্ন ভাবে। তবে মূল পথ অবশ্যই থিয়েটার। তাঁর থিয়েটারের ধর্মই ছিল প্রতিরোধ।
সঙ্গীত নাটক একাডেমি, ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। আবার হিন্দির শিক্ষিকাও ছিলেন।

প্রথম মঞ্চে আসা বসন্তসেনা হিসেবে। নাটক 'মিটটি কি গাড়ি'। শূদ্রকের 'মৃচ্ছকটিক' অবলম্বনে। তৃপ্তি মিত্র ও মৃণাল সেনের কাছে কাজ শিখেছেন।১৯৮০ তে নিজের পরিচালনায় প্রযোজনা শুরু করেন।মহাভোজ, রুদালি, কোর্ট মার্শাল এবং অন্তর্যাত্রার মতো নাটক তাঁর বিখ্যাত প্রয়োজনা।
তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে শোকের ছায়া সব মহলে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...