বিশ্বের প্রথম ভাসমান খামার

জলের মধ্যেই দোতলাবিশিষ্ট ভাসমান খামার - আর সেখানে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে এক দল গরু। ঝাঁ চকচকে এই খামার ডাঙার সাথে যুক্ত একটা ছোট্ট ব্রিজ দিয়ে। তাই দিয়েই দিব্যি ওঠা নামা করছে গরু। এই অভিনব ভাসমান খামার বাড়ি আছে নেদারল্যান্ডসের  আমস্টারডামে। যেখানে অন্তত গোটা ৪০ গরু নিশ্চিন্তে স্বাচ্ছন্দের সাথে রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ এতো জায়গা থাকতে জলের মধ্যেই খামারের পরিকল্পনার কি কারণ? মূলত আমস্টারডামের গোটা শহর জুড়েই আছে ছোট ছোট খাল, আর সেই অর্থে মূল শহরে ফাঁকা জায়গা তেমন নেই বললেই চলে। তাই এই পরিকল্পনা। আরো একটি কারন আর্কিটেক্ট সংস্থা 'গোল্ডস্মিথের' দুই আর্কিটেক্ট পিটার ও মিনকে ভ্যান উইনগার্ডের মাথায়  আসে। কারণটি হলো গ্লোবাল ওয়ার্মিং।

তাদের মতে, উষ্ণায়নের ফলে ক্রমবর্ধমান জলস্তর ভবিষ্যতে খামারের জায়গাকে অনেকটাই বিপর্যস্ত করে তুলবে। ফলে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি বিবেচনা করে জলেই তাদের এই ভাসমান খামারের পরিকল্পনা। খামারের ব্যবসায়ী আলবার্ট বোয়ারসেনেরও বিষয়টি মনোগ্রাহী  হওয়ায় তাদের যৌথ প্রয়াসেই তৈরী হয় বিশ্বের প্রথম ভাসমান খামার। ২০১২ সালে কাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় ১০১৭ এর শেষে। তার পর থেকেই যাত্রা শুরু।

               তবে খামারটি বানানোর ক্ষেত্রে তার সৌন্দর্য্যায়নের প্রতি ছিল বিশেষ লক্ষ্য। তার সাথে পরিবেশবান্ধব বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। খামারের পাশের সোলার প্যানেলের সাহায্যে খামার আলোকিতকরণ করা হয়। এছাড়াও অত্যাধুনিক কিছু ব্যবস্থাও আছে এখানে। খামারের ছাদের রেন পাইপের সাথে যুক্ত একটি ট্যাঙ্ক। সেই ট্যাঙ্কে জমা বৃষ্টির জল পরিশোধিত করে খামারের কাজে ব্যবহার করা হয়। এখানে লাগানো হয়েছে বেশ কিছু গাছ। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত ছাঁটা ঘাসই খাদ্য গরুদের। এদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রতি সপ্তাহে চিকিৎসক নিযুক্ত আছেন। অত্যাধুনিক রোবোটিক মেশিনের সাহায্যে দুধ সংগ্রহ করা হয়। 

            দোতলা খামারের নিচে স্টোর রুমে ডেয়ারির জিনিসপত্র সেখানে সংরক্ষিত হয়। খামার থেকে বিভিন্ন শহরে দুধের চাহিদা মেটানো হয়। আপাতত খামারটি মিরউই হ্যাভেন শহরের একটি বন্দরে রাখা হলেও পরে স্থানান্তরিত করা হবে এই ভাসমান খামার। যদিও এই অভিনব খামারের অভিনবত্ব ইতিমধ্যেই পর্যটকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।   

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...