নয়াবাদ তিতাস নাট্যদল প্রযোজিত নাটক 'তবু অনন্ত জাগে'। এটি তাদের নাট্যদলের পঞ্চম প্রযোজনা। নয়াবাদ তিতাস নাট্যদলের প্রথম প্রযোজনা বাদল সরকারের 'সারারাত্রি' এরপর একে একে 'পেশেন্ট ফোর সি', 'রাজকাহিনী' প্রভৃতি। তবু অনন্ত জাগে নাটকের গবেষক, নাট্যকার ও নির্দেশক হলেন আবির।এই নাটকের মূল বক্তব্য শোক -মৃতুদর্শন-সাহিত্যসৃষ্টি এবং রবীন্দ্রনাথ।
রবিঠাকুর তাঁর জীবনে বহু আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব ও প্রিয় মানুষের মৃত্যু দেখেছেন। এই সমস্ত মৃত্যু থেকে ব্যথিত রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টি করেছেন বহু গান, নাটক ও বহু মূল্যবান চিঠি। একাশি বছরের জীবনে তাঁর বহু যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ লেখার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের আশি বছরের জন্মদিন পালিত হয় ডঃ মনমোহন সেন ও তাঁর স্ত্রী মৈত্রেয়ী দেবীর বাড়িতে। সেইদিনই খবর আসে সুরেন্দ্র নাথ ঠাকুর মারা গেছেন। কিন্তু সেই খবরটা কেউ সাহস করে রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরকে দিতে পারছিলেননা। মনমোহন সেন রবীন্দ্র নাথ কে চেনেননা। তিনি জানেননা এই খবর শুনে রবীন্দ্রনাথ ঠিক কি রকম প্রতিক্রিয়া করবেন। কিন্তু অপর দিকে মৈত্রেয়ী দেবী খুব ভালো করে চেনেন কবি গুরু কে। সেই রাতে মনমোহন বাবু মৈত্রেয়ী দেবী কে প্রশ্ন করেন -শোক ওনার আত্মার সংযমে বিঘ্ন ঘটাতে না পারে কিন্তু শরীর কি সেই লড়াই লড়তে পারবে? সেই সময়ে মৈত্রেয়ী দেবী দেখেছেন, রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু কে দেখা, মৃত্যুকে সহন করা, ও সেই মৃত্যু থেকে কিভাবে সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন তিনি একের পর এক সারা রাত ধরে।
এই নাটক জুড়ে মৈত্রেয়ী দেবী বর্ণনা করছেন রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের সারা জীবন ধরে মৃত্যুকে দেখা ও তাঁর শোক কিভাবে লেখার মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ পেয়েছে। নাটকটি মূলত তাঁর জীবনে আশি বছর থেকে পিছোতে থাকে। নাটক শেষ হয় কাদম্বরীর মৃত্যু দিয়ে। এই নাটকে কবিগুরুর জীবনের চারটে ভাগ দেখা যাবে। শিশু রবি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৈনাক মুখ্যার্জি, সদ্য যৌবনে পা দেওয়া রবির চরিত্রে অভিনয় করেছেন গৌরব চৌধুরী, পরিণত রবির চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভ্র চক্রবর্তী এবং জীবনের পড়ন্ত রবির চরিত্রে অভিনয় করেছেন শান্তুনু মুখার্জি। এছাড়া মৈত্রেয়ী দেবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন শর্বরী মুখার্জি।