পূর্বাভাস থাকলেও এখনও দেখা নেই বরুণদেবের। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপ। শুষ্ক জমিতে অচিরেই ধরে ফাটল। অসমে ভারী বৃষ্টিপাতে যখন বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলিতে দেখা দিচ্ছে তীব্র জলসঙ্কটের অশনিসংকেত। আরও কিছুদিন এভাবে চলতে থাকলে খুব শিগগিরই দ্বিতীয় চেন্নাইয়ের তকমা পেতে চলেছে হায়দ্রাবাদ।
বৃষ্টিপাত সঠিক পরিমাণে না হলে শহরবাসী আগস্টের শেষ থেকে এক ফোঁটাও পানীয় জল পাবেন না। চলতি বছরের মাঝামাঝি এসে এমন দৃশ্য দেখতে হয়েছে চেন্নাইকেও। সোনার দামে বিক্রি হচ্ছে জল। এক ড্রাম জলের মূল্য এক গ্রাম সোনার দাম দিয়ে মেটাতে হচ্ছে মানুষকে। এই তীব্র গরমে জলসঙ্কট যেন ক্রমে এক মহামারির আকার ধারণ করছে ভারতবর্ষে। চেন্নাইয়ের মানুষেরা স্নানের জল সংগ্রহ করছেন নর্দমা থেকে। সেই জলই যাতে পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব হয় তাই জমিয়ে রাখছেন ব্যবহৃত সেই জল।
বর্তমানে হায়দ্রাবাদে সে ধরণেরই একটা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে শহরের জলাধারগুলো শুকিয়ে গিয়েছে। এইমূহুর্তে জলাধারগুলিতে যেটুকু জল সঞ্চিত আছে তা দিয়ে হায়দ্রাবাদ, সেকেন্দ্রাবাদ, গ্রেটার হায়দ্রাবাদে আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতি বছর বৃষ্টিপাতের জেরে জলস্তর ৫ থেকে ১০ ফিট বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছর এক ফিট'ও বাড়েনি জলস্তর। কোনও কোনও জায়গায় জলস্তর ৬ ফিটের'ও নিচে নেমেছে। বিগত বছরে এই সময় শ্রীপদ ইয়েল্লাপল্লির জলাধারে জলস্তর ছিলো ৪৬৮ মিটার। এ বছর ওই একই সময়ে সেখানে জলস্তরের উচ্চতা ৪৫৯ মিটার। যা গত বছরের তুলনায় অন্তত ৯ মিটার কম।
গোদাবরী নদীর উপর ইয়েল্লামপল্লি, কৃষ্ণা নদীর উপর নাগার্জুন সাগর অন্যদিকে ওসমান সাগর, হিমায়ন সাগর থেকে হায়দ্রাবাদ এবং আশেপাশের থেকে সাধারণত জল সংগ্রহ করা হয়। এইসমস্ত জালাধারগুলিতে গত বছরের তুলনায় এই বছর জলস্তর ১২ ফিট নিচে নেমে গেছে। আর মাত্র ৪৬ দিন। এর মধ্যে বৃষ্টিপাত না হলে জলের অভাবে নাকাল হতে হবে হায়দ্রাবাদকেও। আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে ভারতের বহু অংশের জনপদ।