পরিচালকদের সাথে ফেডারেশন সংস্থার সংঘাতে কার্যত অচল বাংলার টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। বিগত কিছুদিন ধরে টেকনিশিয়ানদের সাথে মতানৈকের ফলে প্রতিবাদে নেমেছে পরিচালকগণ।
ঘটনাটি শুরু হয়েছিল পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের এক শুটিং-কে কেন্দ্র করে। ফেডারেশন সংস্থা রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তিনি একটি ওয়েব সিরিজের কাজ টলিগঞ্জে শুরু করার চারদিন পরই কাউকে কিছু না জানিয়ে বাংলাদেশে চলে যান। এবং সেখানে বাকি অংশ শুটিং শেষ করেন। ফেডারেশন এই কাজকে নীতিবিরুদ্ধ বলে দাবী করে রাহুলকে বয়কট করার ডাক দিয়েছিল।
কিন্তু এরপর ঘটনা আরও জটিল হয়। শনিবার, ২৭ শে জুলাই টেকনিশিয়ান স্টুডিও প্রয়োজনা সংস্থা SVF-এর একটি শুটিং ছিল, কিন্তু কোন টেকনিশিয়ান সেদিন কাজ করতে আসেন না। এরফলে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য সহ প্রভৃতি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দীর্ঘ সময় অবধি অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু তাও তারা শুটিং শুরু করতে পারেননা। এরপরই সমস্যা আরও বাড়ে। পরিচালক, প্রযোজক এবং অভিনেতারা মিলিতভাবে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন।
পরিচালক ও বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী জানান, শনিবার থেকে ফেডারেশনকে দুদিনের সময়সীমা দেওয়া হল, এরমধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে পরিচালকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য শুটিংয়ে যোগ দেবেন না।
উল্লেখ্য, রাহুল মুখোপাধ্যায়ের বাংলাদেশে শুটিং-এর ঘটনায় ডিরেক্টর্স গিল্ডও প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্ধ হয়েছিল। সেই কারণে গিল্ডের সদস্য হওয়ার সত্ত্বেও ৩ মাসের জন্য রাহুলকে তারা সাসপেন্ড করেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা সেই সাসপেন্ড অর্ডার তুলে নেয়।
গিল্ডের সম্পাদক সুদেষ্ণা রায় জানান, সমস্যার সমাধান না হওয়া অবধি পরিচালকরা শুটিংয়ে না যেতে পারেন। তবে যদি কেউ কাজ করতে চান তাকে বাধা দেওয়া হবে না। জানা গিয়েছে প্রায় ২১০ জন পরিচালকরা কাজে আসবেন না বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এই কর্মবিরতি শুধুমাত্র বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে নয়, বরং সিরিয়াল, ওটিটি প্লাটফর্ম ইত্যাদি সবকিছুর ক্ষেত্রেই কর্মবিরতি ডেকেছে কলাকুশলীরা।
প্রসঙ্গত, সোমবার এই নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বালিগঞ্জের বাড়িতে। যাদের মধ্যে রয়েছেন, রাজ চক্রবর্তী, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায়, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, সুব্রত সেন সহ অন্যান্য পরিচালক প্রযোজকরা। এই অচল অবস্থার কোন সমাধান পাওয়া যায় কিনা তাই নিয়ে চিন্তিত গোটা টলিউড পাড়া।