দুই বাংলার তিন প্রজন্মের শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হল ‘শিল্পচর্চা ফাউন্ডেশন’-এর তৃতীয় বার্ষিক প্রদর্শনী। অতিমারীর জেরে পুরোটাই ডিজিটাল ব্যবস্থায়। অনলাইন মাধ্যমে।
অতীত বছরগুলিতে ফাউন্ডেশনের দুটি প্রদর্শনী ও দুটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতার গগণেন্দ্র প্রদর্শশালা ও নটী বিনোদিনী আর্ট গ্যালারীতে।
চলতি বছরের ১৯ জুলাই অর্থাৎ, উল্টোরথের দিন থেকে এই অনলাইন প্রদর্শনীটি শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে এক এক শিল্পীর একাধিক শিল্পকর্ম প্রকাশ করা হয়।
এই প্রদর্শনীতে দুই বাংলা মিলিয়ে চল্লিশজন শিল্পী অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশ থেকে দশ নবীন-প্রবীণ শিল্পী এবং রয়েছেন ভারত থেকে তিরিশজন শিল্পী। বিশিষ্ট শিল্পী সমরজিৎ রায়চৌধুরী, পার্থপ্রতিম দেব, দেবব্রত চক্রবর্তী, হামিদুজ্জামান খান, আইভি জামান, পাশাপাশি অনেক সমসাময়িক প্রবীণ ও নবীন শিল্পী তাদের কাজ দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন।
এছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন ময়নুল আবেদিন, রবিউল ইসলাম, নাজিব তারেক, মিল্টন মোমেন, দেবাশীষ পাল, কাদিমুল ইসলাম, রোকনুজ্জামান উজ্জ্বল প্রমুখ। এদেশের যেসব শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেছেন তারা হলেন প্রণব ফৌজদার, পৃথ্বীশ শিকদার, স্বপন সাহা, তপন পাঠক, অভিশঙ্কর মিত্র, বিশ্বজিৎ সাহা, সুধীরঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও আরো অনেকে। প্রসঙ্গত, প্রয়াত শিল্পী দ্বিজেন গুপ্তর কিছু কাজও প্রদর্শিত হয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এই প্রজন্মের নবীন শিল্পী অমিত বিশ্বাস ও চিন্ময় মুখোপাধ্যায় এই প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন।
ওপার বাংলা ও এপার বাংলার শিল্পীরা স্বভাবতই খুশি ছবি ও শিল্পকলাকে কেন্দ্র করে এই ধরনের মিলন উৎসবে। তাঁরা জানিয়েছেন, এই সেতুর মাধ্যমে তৈরি হওয়া আগ্রহ আগামীদিনে নিশ্চয়ই নতুন সৌহার্দ্যের রাস্তা খুলে দেবে শিল্পমাধ্যমে।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পুত্র ও শিল্পী এবং প্রকৌশলী ময়নুল আবেদিন সাধুবাদ জানিয়েছেন এই উদ্যোগকে। তাঁর কথায়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে শিল্পীদের মনোবল বাড়াতে এধরনের উদ্যোগ আরো দরকার। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর ক্ষেত্রে এ ধরনের সাংস্কৃতিক উদ্যোগ মানুষের মধ্যে আরো বেশি করে ছড়িয়ে পড়ুক।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরামিক বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক শিল্পী দেবাশিস পাল জানিয়েছেন, ‘অনলাইনে হলেও প্রদর্শনীর উপস্থাপনা প্রশংসনীয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও এক সহযোগী অধ্যাপক এবং শিল্পী মোঃ আব্দুল মোমেন মিল্টনও উচ্ছ্বসিত এপার বাংলার এই উদ্যোগকে ঘিরে।
প্রদর্শনীর কর্মকান্ড নজর কেড়েছে দুই বাংলার শিল্পী ও শিল্পরসিকদের। ভবিষ্যতে ফাউন্ডেশন আরো নানাধরণের শৈল্পিক কর্মকান্ড পরিকল্পনা করতে চলেছে। তার মধ্যে অনলাইন প্রদর্শনী আছে। অফলাইনে প্রদর্শনী, শিল্প সংক্রান্ত কর্মশালা ও আলোচনা অনুষ্ঠান রয়েছে। প্রসঙ্গত, শিল্পীমহল থেকে আগামীতে আরো বেশি সংখ্যক সৃজনশীল শিল্পীদের সংযুক্ত করবার ভাবনা ও বার্তা এসেছে। এই প্রদর্শনীটির ডিজিটাল পার্টনার ছিল জিয়ো বাংলা ।
আগ্রহীরা যে কোনও সময়ই ‘শিল্পচর্চা ফাউন্ডেশন’-এর ফেসবুক পেজে গেলেই প্রদর্শনী ও শিল্পীদের কাজ দেখতে পাবে।
নিবন্ধে ব্যবহৃত চিত্রকর্মের শিল্পী ময়নুল আবেদিন (বাংলাদেশ) এবং দেবব্রত চক্রবর্তী (ভারত)